খুলনা | মঙ্গলবার | ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশের হ্যাটট্রিক সিরিজ হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১১:৫৪ পি.এম | ১১ অক্টোবর ২০২৫


আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা ২ ওয়ানডে সিরিজ হারের ক্ষত নিয়েই আবুধাবিতে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটের হার আবারও সিরিজ হারের শঙ্কা জাগায়। এবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটারদের ভরাডুবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০৯ রানেই অলআউট হয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারলো বাংলাদেশ।

আগে ব্যাট করে আফগানিস্তানও বড় রান পায়নি। তারা ১৯০ রানেই অল আউট হয়ে যায়। ফলে বলাই যায় বোলাররা তাদের কাজটা ঠিকভাবেই করেছিলেন। তবে কে জানত ব্যাট হাতে বাংলাদেশ আবারও ব্যর্থ হবে। হয়েছেও তাই। 

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে টাইগাররা। আরও একবার ব্যাট হাতে ব্যর্থ তানজিদ হাসান তামিম। ওমরজাইয়ের বলে ইনিংসের প্রথম ওভারেই পুল খেলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শূন্য করে। দুই নিতে গিয়ে রানআউটের ফাঁদে পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত (৭)।

সাইফ হাসান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কিন্তু আপারকাটের লোভ সামলাতে পারেননি। ২৩ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ২২ করে ওমরজাইয়ের বলে সাজঘরে ফেরত আসেন তিনি। ওমরজাই তার তৃতীয় শিকার বানান মেহেদী হাসান মিরাজকে। ৪ রান করেই এলবিডব্লিউ হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫০ রানে ৪ উইকেট হারায় দল।

জাকের আলী আর তাওহিদ হৃদয় মিলে সেই ধাক্কা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু হৃদয়ের ভুলে ভাঙে ২৯ রানের জুটি। রশিদ খানকে বড় শট হাঁকাতে গিয়ে পরিষ্কার বোল্ড হন হৃদয়। ৩৪ বলে ২৪ রানের ইনিংসে চারটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।

৭৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেননি কেউ। নুরুল হাসান সোহান ও তানজিম সাকিবকে টানা দুই বলে বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জানিয়েছিলেন রশিদ খান। জাকের আলীও ৪৩ বল খেলে মাত্র ১৮ করে ফেরেন সাজঘরে। একশর আগে (৯৯ রানে) ৮ উইকেট হারিয়ে পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২৮.৩ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

রশিদ খান মাত্র ১৭ রান দিয়ে নেন ৫টি উইকেট। এর আগে ৪৪.৫ ওভারে আফগানিস্তানকে ১৯০ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলেন মিরাজ-রিশাদরা।

আবুধাবিতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় আফগানিস্তান। বেশ দেখেশুনেই শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার গুরবাজ আর সেদিকুল্লাহ অতল। পঞ্চম ওভারে এসে আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। তাকে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে জাকের আলীর ক্যাচ হন গুরবাজ (১১)। ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানরা।

নবম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেট তুলে নেন তানভীর ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে লংঅনে তানজিম সাকিবকে ক্যাচ দেন সেদিকুল্লাহ অতল (৮)। ৩৮ রানে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় উইকেটের পতন।

এরপর অনেকটা সময় একা দলকে এগিয়ে নিয়েছেন ইব্রাহিম জাদরান। তবে হাসমতউল্লাহ শহিদি আর আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশ। ইনিংসের ১৮তম ওভারে শহিদিকে (৪) বোল্ড করেন মিরাজ। পরের ওভারে রিশাদ হোসেন স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ওমরজাইকে (০)। ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে আফগানরা।

মোহাম্মদ নবি সেট হয়ে গিয়েছিলেন। তার ইনিংসটি থামে তানজিম সাকিবের বলে কভারে মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। ২২ রান আসে নবির ব্যাট থেকে। ১১৮ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে আফগানিস্তানের। ইব্রাহিম জাদরান তবু লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। লোয়ার অর্ডারের নানগায়েলিয়া খারোতেকে নিয়েও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। দুজন যোগ করেন ৩৬ রান। খারোতের (১৩) বিদায় হয় বাউন্ডারি থেকে তানজিদ তামিমের দুর্দান্ত এক থ্রোতে সরাসরি স্টাম্প ভাঙায়। মিরাজের বলে রশিদ খান আউট হন ১ রান করেই।

১৫৭ রানে ৭ উইকেট হারালেও হাল ছাড়েনি আফগানিস্তান। পথের কাঁটা জাদরানকে সরানো যাচ্ছিল না কিছুতেই। অবশেষে জাদরান নিজের ভুলেই উইকেট দেন মিরাজকে। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থাকতে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেট বাউন্ডারিতে রিশাদ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন জাদরান। ১৪০ বলে ৯৫ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসে মাত্র তিনটি চার আর একটি ছক্কা মারেন আফগান ওপেনার। পরের ওভারেই গাজানফর ২২ করে রিশাদের বলে ক্যাচ দেন।

আফগানিস্তানের ৯ উইকেট পতনের পর এর আগে রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া রহমত শাহ (৯) মাঠে নেমেছিলেন দলের জন্য। কিন্তু রিশাদ হোসেনের বলে ব্যাট করতে গিয়ে আবারও ক্রিজে পড়ে যান। ফলে আর ব্যাটিং করতে পারেননি। ৪৪.৫ ওভারে ১৯০ রানেই থামে আফগানরা।

মেহেদী হাসান মিরাজ নেন ৩টি উইকেট। দুটি করে উইকেট তানজিম সাকিব আর রিশাদ হোসেনের।