খুলনা | মঙ্গলবার | ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিনজন

খবর প্রতিবেদন |
০৪:২৯ পি.এম | ১৩ অক্টোবর ২০২৫


এ বছর অর্থনীতিতে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জোয়েল মোকির, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক ফিলিপ অ্যাঘিওন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক পিটার হাউইট।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হলো।

উদ্ভাবন নির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তত্ত্ব আবিষ্কার ও ব্যাখ্যা করার জন্য নোবেল দেওয়া হয়েছে এই তিন অর্থনীতিবিদকে। এই তত্ত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধি’- প্রণয়ন ও ব্যাখার জন্য পুরস্কারের অর্ধেক পাবেন জোয়েল মোকিয়র।

তত্ত্বের অপর অংশ সৃজনশীল বিনাশের (ক্রিয়েটিভ ডেসস্ট্রাকশন) প্রণয়ন ও ব্যার্খার জন্য পুরস্কারের বাকি অর্ধেক ভাগাভাগি করে নেবেন ফিলিপ আগিয়োঁ এবং পিটার হাউইট।

প্রথা অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার হিসেবে গতকাল ৬ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। চলতি বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ৩ বিজ্ঞানী- মেরি ব্রাঙ্কো, ফ্রেড রামসডেল এবং শিমন সাগাগুচি। পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স নিয়ে গবেষণার জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৫ সালে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেলেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. ডেভোরেট এবং জন এম মার্টিনিস। বৈদ্যুতিক সার্কিটে ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং এবং শক্তি পরিমাপ আবিষ্কারের জন্য তাদের মনোনীত করা হয়।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ঘোষণা করা হয় রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম। এ বছর যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুসুমু কিতাগাওয়া, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড রবসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমর এম. ইয়াঘি। ধাতু-জৈব কাঠামোর উদ্ভাবনের জন্য তাদের মনোনীত করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। মনোমুগ্ধকর এবং দুরদর্শী রচনার জন্য ২০২৫ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান লেখক লাসজলো ক্রাসনাহোরকাই।

এছাড়াও (১০ অক্টোবর) ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কার পেলেন ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ভেনিজুয়েলার সাধারণ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের আদায়ে উদ্বুদ্ধ করা এবং ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে একনায়কতন্ত্র থেকে দেশকে গণতান্ত্রিক পথে নেওয়ার আন্দোলনের জন্য তাকে মনোনীত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত,  অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। নোবেল পুরস্কারগুলো সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থ থেকে দেওয়া হয়। সুইডিশ শিল্পপতি নোবেল ডিনামাইটের উদ্ভাবক ছিলেন। তার মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও সম্মানজনক এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। তবে আলফ্রেড নোবেলের উইলে পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কারের কথা থাকলেও অর্থনীতিতে পুরস্কার দেওয়ার কথা উল্লেখ ছিল না।

আনুষ্ঠানিকভাবে এটি ‘সোশ্যাল সায়েন্সে ব্যাংক অব সুইডেন পুরস্কার’ নামে পরিচিত। যদিও এই পুরস্কারটি নোবেল পুরস্কারের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং একই ধরনের মর্যাদা রাখে, তবে এটি আলফ্রেড নোবেলের মূল পাঁচটি পুরস্কারের অংশ নয়, যা তিনি ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৬৮ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের ৩০০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই পুরস্কারটি চালু করে।

২০২৪ সালে মার্কিন তিনজন অর্থনীতিবিদ: ড্যারন অ্যাসেমোগ্লু, সাইমন জনসন এবং জেমস এ. রবিনসন। তারা গবেষণা করেছেন কিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো গঠিত হয় এবং এর সমৃদ্ধির ওপর কী প্রভাব পড়ে, এই বিষয়গুলো নিয়ে।

এর আগে ২০২৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান মার্কিন অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোল্ডিন, যিনি নারী শ্রম বাজারের ফলাফল নিয়ে গবেষণার জন্য এই সম্মাননা পান।

উল্লেখ্য, আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্টকহোম ও অসলোতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হবে। এ সময় প্রতি বিষয়ের বিজয়ীদের হাতে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার চেক, একটি মানপত্র এবং একটি স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে। ২০২৩ সালে সুইডিশ ক্রোনারের মূল্যস্ফীতির কারণে প্রাইজ মানির পরিমাণ ১০ মিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি করে ১১ মিলিয়ন ক্রোনা করা হয়।