খুলনা | বুধবার | ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

শহরের পচা দিঘী থেকে রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

কচুয়ায় গভীর রাতে দুর্বৃত্তের হামলায় যুবদল নেতার মৃত্যু, ছোট স্ত্রী হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট |
০১:৫২ এ.এম | ১৫ অক্টোবর ২০২৫


বাগেরহাটের কচুয়ায় গভীর রাতে দুর্বৃত্তের হামলায় যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম মিন্টু (৪৫) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে শহরের পচা দিঘী থেকে ভাসমান অবস্থায় সুমন্ত বিশ্বাস নামের এক রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হত্যার শিকার মিন্টু কচুয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের সরদার আবু বক্কারের ছেলে। তার দুই স্ত্রী, ৯ বছর বয়সী এক ছেলে ও ৬ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে। তিনি এক সময় কচুয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি রাড়িপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। 
পুলিশ সূত্রে জানা যায় দুই বিয়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরে মিন্টু পারিবারিক অশান্তিতে ছিলেন। সোমবার রাতে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি শিবপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে ছিলেন। এক পর্যায়ে গভীর রাতে বড় স্ত্রীর সাথে মিন্টুর ঝামেলা শুরু হয়। তাদের মধ্যে উচ্চস্বরে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে বাইরে থেকে থেকে ৮-১০ জন লোক এসে মিন্টু ও তার ছোট স্ত্রী মিলি মজুমদারকে মারধর করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে বাগেরহাট ২৫০ জেলা হাসপাতালে নেয় পরিবারের সদস্যরা। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। আর মিলি মজুমদার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
হত্যার শিকার মিন্টুর বোন জামাই ও ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইদুল মোল্লা বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে করায় দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ ছিল মিন্টুর পরিবারে। ছোট বউ বাড়িতে ছিল না। কিছুদিন আগে ছোট বউ মিলি মজুমদারকে এই বাড়িতে নিয়ে আসে মিন্টু। এরপর থেকে ঝগড়া-বিবাদ আরও বৃদ্ধি পায়। তিনি আরও বলেন গভীর রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে বাইরে থেকে ৮-১০ জন লোক এসে ছোট স্ত্রী ও মিন্টুকে মারধর এবং কুপিয়ে আহত করে। আসলে কেন হত্যা হয়েছে বিষয়টি আমরা এখনও স্পষ্ট না। তদন্তপূর্বক এই হত্যার সঠিক রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি। 
রাড়িপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সরদার রেজাউল হোসেন চল বলেন মিন্টু যুবদলের নিবেদিত কর্মী ছিলেন। এটা পারিবারিক ও রাজনৈতিক যেকোন ধরণের হত্যা হতে পারে। যেভাবে হোক হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান এই নেতা। এদিকে হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্টুর বড় স্ত্রী ঝর্না বেগমকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। 
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শামীম হোসেন বলেন আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বড় স্ত্রী ঝর্না বেগমকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই হত্যার সাথে অন্য কোন ইস্যু রয়েছে কিনা সেসব বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। 
এদিকে এদিন সকালে বাগেরহাট শহরের পচা দিঘী থেকে ভাসমান অবস্থায় সুমন্ত বিশ্বাস নামের এক রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।