খুলনা | শনিবার | ১৮ অক্টোবর ২০২৫ | ২ কার্তিক ১৪৩২

যশোরে ৫৮.২৫ ও খুলনায় ৫৩.৯৮ শতাংশ

এইচএসসি : যশোর বোর্ডে ফলাফলে বিপর্যয়, পাশের হার ৫০.২০

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:১৯ এ.এম | ১৭ অক্টোবর ২০২৫


যশোর শিক্ষা বোর্ডে এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলে বিপর্যয় নেমে এসেছে। সারাদেশের তুলনায় বোর্ডটির পাশের হার প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। পাশের হার মাত্র ৫০.২০ শতাংশ, যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ভেন্যু কেন্দ্র প্রত্যাহার করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা গ্রহণের কারণে এমনটি হয়েছে। তবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ “ফল বিপর্যয়” বলতে নারাজ। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ৯৯৫ জন।
যশোর বোর্ডে পাশের হারে বিভাগের ১০ জেলায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা। চলতি বছর খুলনা জেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৫৩.৯৮ শতাংশ।  বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ আসমা বেগম।
এ বছর যশোর বোর্ডের আওতায় ১০ জেলা থেকে মোট এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছেন ৫৬ হাজার ৫০৯ জন। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২১ হাজার ১৮০ জন পরীক্ষা দিয়ে ১৫ হাজার ৯৩১, মানবিক বিভাগে ৭৮ হাজার ৯৯৯ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৪ হাজার তিন ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ১২ হাজার ৩৯৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন ছয় হাজার ৫৭৫ জন। পাঁচ হাজার ৯৯৫ জন পেয়েছেন জিপিএ-৫। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে তিন হাজার ৩৮১, মানবিক বিভাগে দু’হাজার ১৭৯ ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ৪৩৫ জন রয়েছেন।
যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ৯৯৫ জন জিপিএ-৫, জিপিএ-৪ থেকে ৫ এর নীচে ১৯ হাজার ৩০, জিপিএ-৩.৫ থেকে ৪ এর নিচে ১৪ হাজার ৩৬, জিপিএ-৩ থেকে ৩.৫ এর নিচে ১১ হাজার ১৫৪, জিপিএ-২ থেকে ৩ এর নিচে ছয় হাজার ১৫৮ এবং জিপিএ-১ থেকে ২ এর নীচে ১৩৬ জন রয়েছেন।
জেলা পর্যায়ে পাশের হারে এবার শীর্ষে রয়েছে যশোর। যশোর জেলায় পাশ করেছেন ৫৮.২৫ শতাংশ। এছাড়া, খুলনায় ৫৩.৯৮, বাগেরহাটে ৪১.৮৫, সাতক্ষীরায় ৫২.৬৪, কুষ্টিয়ায় ৪৮.৮৫, চুয়াডাঙ্গায় ৫০.৩৫, মেহেরপুরে ৪৮.৫১, নড়াইলে ৪৬.৪৬, ঝিনাইদহে ৪৫.০৭ ও মাগুরায় সর্বনিম্ন ৩৭.৪৬ শতাংশ পাস করেছেন।সব মিলিয়ে এবারে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৯৯৫ জন শিক্ষার্থী। 
গত বছর যশোর বোর্ডে গড় পাশের হার ছিল ৬৪.২৮ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৭৪৯ জন। এবার শুন্য পাশের কলেজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০টি।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছর যশোর বোর্ডের অধীনে ১০ জেলার মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৫৬ হাজার ৫০৯ জন। তিনটি বিভাগে পাশের হার ও জিপিএ-৫ এর সংখ্যা নিম্নরূপ
বিজ্ঞান বিভাগ : ২১ হাজার ১৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৫ হাজার ৯৩১ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৩৮১ জন।
মানবিক বিভাগ : ৭৮ হাজার ৯৯৯ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৩৪ হাজার ৩ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ১৭৯ জন।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ : ১২ হাজার ৩৯৫ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৬ হাজার ৫৭৫ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩৫ জন।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আব্দুল মতিন বলেন, জুলাই আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের কিছু ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খাতার যথার্থ মূল্যায়ন হয়েছে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে আমরা বেড়িয়ে এসেছি। যে কারণে পাশের হার কমেছে। শূন্য পাশের কলেজের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ আসমা বেগম বলেন, “ফলাফল আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে কম। তবে শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং মেধাবীদের এগিয়ে আনতে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।”