খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | ৮ কার্তিক ১৪৩২

এবার মিটফোর্ডের আদলে নৈশপ্রহরীকে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যা

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৮ পি.এম | ২৩ অক্টোবর ২০২৫


নারায়ণগঞ্জে আবু হানিফ (৩০) নামে এক নৈশপ্রহরীকে নৃশংসভাবে ইট দিয়ে থেঁতলে ও পিটিয়ে হত্যার একটি ভয়াবহ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ৫-৭ জন হামলাকারী উপর্যুপরি ইট দিয়ে হানিফকে থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করছে। এই ঘটনা ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সাম্প্রতিক ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব্যাপক মিল খুঁজে পাওয়া গেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে হানিফকে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। একটি শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে তাকে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

নির্মম নির্যাতনের পর হামলাকারীরা অচেতন অবস্থায় হানিফকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৯টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাহাদাত হোসেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ঘটনার পর পুলিশ তিনজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন—কুমিল্লার মুরাদনগরের সায়েস্তারা গ্রামের বাহার (৩৬) ও তার ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), এবং নারায়ণগঞ্জের মেট্রোহল এলাকার শফিকুল রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির বলেন, ‘আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িত অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ‘নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়িতে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।’

হানিফের ছোট বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসে আমার ভাইকে মারতে মারতে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তারা শোনেনি। পরে শুনি, তারা নাকি বলে ভাই বাচ্চা ধর্ষণ করতে চেয়েছিল—কিন্তু কোন মেয়ে, কবে, কিছুই জানি না।’

হানিফের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে তিনি কাজের জায়গা থেকে দ্রুত বাড়িতে ফেরেন। ‘আমাকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, এলাকার কিছু ছেলে বাসায় ঝামেলা করছে। বাসায় ফিরে দেখি, তারা আমাকে ধরে খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে দেখি, হানিফ ভাইকে ভিতরে বসিয়ে রেখেছে ১০-১২ জন যুবক। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে একজনকে চিনতে পারি। পরে তারা হানিফ ভাইকে অটোতে তুলে কোথায় যেন নিয়ে যায়। অনেক পরে আমরা তাকে হাসপাতালে পাই,’ বলেন তিনি।