খুলনা | রবিবার | ২৬ অক্টোবর ২০২৫ | ১০ কার্তিক ১৪৩২

রাতে বাসর, সকালে মিললো বরের লাশ

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৭ এ.এম | ২৫ অক্টোবর ২০২৫


পারিবারিক ভাবে হয় বিয়ে। ধুমধামে বরযাত্রী নিয়ে কনেকে আনা হয় বরের বাড়িতে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে নবদম্পতিকে পাঠানো হয় বাসরঘরে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস-সকালেই আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ পাওয়া যায়। ঘটনাটি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে ঘটে। শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত বরের নাম মোঃ জামাল ফকির (২৮)। তিনি পিসনাইল গ্রামের মোঃ রোজব ফকিরের ছেলে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জামাল ছিলেন সেজো। তবে বরের এ মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবারের দাবি জামাল গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়ার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। আর স্থানীয়রা বলছেন, আখক্ষেতের বেড়ার ওই বাঁশের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব।
বরের পরিবার জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পারিবারিকভাবে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মোঃ লিটন ভূঁইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তারকে (২৩) বিয়ে করেন জামাল ফকির। বিকেলে কনেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন বর। রাতে নবদম্পতি বাসরঘরে শুয়ে ছিলেন। 
শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় বর জামালের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় কৃষকরা। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় আখখেতের বেড়ার বাঁশে যেভাবে লাশ ঝুলে ছিল, তাতে মনে হয় না সে আত্মহত্যা করেছে। কারণ বাঁশের আড়ার উচ্চতা ছিল ২ থেকে আড়াই ফিট। সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করলে পা মাটিতে মিশে যাবে।
মৃতের স্ত্রী রোকেয়া বলেন, সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গেলে দেখি দরজার বাইরে শিকল লাগানো। পরে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দিলে দেখি আমার স্বামীর লাশ জমির মধ্যে পড়ে আছে।
নিহতের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। সে কারও সঙ্গে কোনো শত্র“তা করেনি। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটলো, বুঝে উঠতে পারছি না।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আতাউর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার ওই ছেলেটি বিয়ে করেন। রাতে বাসর ঘরে নতুন বউ নিয়ে তিনি শুয়ে ছিলেন। সকালে বাড়ির পাশে একটি আখখেতের বেড়ার বাঁশের আড়ায় তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।