খুলনা | শুক্রবার | ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | ১৫ কার্তিক ১৪৩২

কর্পোরেট চাকুরি ছেড়ে খুলনায় মাংস উৎপাদনের স্বপ্নদ্রষ্টা শামীম

এন আই রকি |
০১:১৭ এ.এম | ৩০ অক্টোবর ২০২৫


এমবিএ (MBA) সম্পন্ন করার পর টানা এগারো বছর ঢাকার এনডিই (NDE) ও খুলনার আকাক্সক্ষা গ্র“পের  রেডিমিক্সের মতো নামি-দামি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করেছেন। কর্পোরেট জীবনে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করার পরও ছোটবেলার এক অদম্য শখ তাকে ফিরিয়ে নিয়ে এলো ভিন্ন পথে। ভালো বেতনের চাকুরি ছেড়ে সেই শখ পূরণে এখন তিনি পুরোদস্তুর গো-খামারি উদ্যোক্তা শামীম চৌধুরী।
নড়াইল সদরের বাসিন্দা হলেও পড়াশোনার সুবাদে শামীম চৌধুরী খুলনায় থাকতেন। খুলনার বিএল কলেজ থেকে পলিটিক্যাল সাইন্সে অনার্স শেষ করে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। 
এত বড় শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে খামার শুরু করা প্রসঙ্গে শামীম চৌধুরী বলেন, “ছোটবেলা থেকেই গরুর প্রতি আমার একটি টান ছিল। এমবিএ শেষ করার পর দীর্ঘদিন চাকুরি করলেও, সেই টান থেকেই খামার করার স্বপ্ন জন্মায়। চাকুরি ছেড়ে এই কাজে আসায় আমার পরিবারের সবাই আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছে।”
চলতি বছরের জুলাই মাসে শামীম চৌধুরী খুলনার দৌলতপুরের দেয়ানা মোল­াপাড়া বিল এলাকায় বিশাল আকৃতির ভাড়া জায়গায় শুরু করেছেন তাঁর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান “মেসার্স আফরান এগ্রো ডেইরি ফার্ম”। বর্তমানে তাঁর খামারে শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ান, ব্রাহামা, ভুটটি ও দেশীয় জাতের প্রচুর গরু রয়েছে। কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে উন্নত জাতের এই গরুগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে এবং প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।
ফার্মের ম্যানেজার রাফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছি। স্থানীয় হাট ছাড়াও যশোর ও কুষ্টিয়া এলাকা থেকে ভালো জাতের গরু আনা হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফার্মটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি এবং ডাক্তারের সহযোগিতায় ভালো মানের প্রাকৃতিক খাবার ও দানাদার খাবারটা দিই।”
শামীম চৌধুরী মনে করেন, তাঁর এই উদ্যোগ শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং খুলনা অঞ্চলের মানুষকে ভালো মানের মাংস সরবরাহ করা এবং একইসঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাও তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য। 
তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য খুলনা অঞ্চলের সবাইকে ভালো মানের মাংস খাওয়ানো। উদ্যোক্তার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিও আমার লক্ষ্য। আপাতত ভাড়া জায়গায় শুরু করলেও, রোজা ও কোরবানির ঈদের পর নিজের জায়গায় বড় করে ফার্মটি করার চেষ্টা করব। ইতিমধ্যেই গরুর ভালো দাম পাওয়া শুরু করেছে।
শিক্ষিত তরুণের এই সাহসী ও সময়োপযোগী উদ্যোগ প্রমাণ করে, সঠিক ইচ্ছা, আগ্রহ এবং পারিবারিক সমর্থন থাকলে চিরাচরিত চাকুরির পেছনে না ছুটেও তরুণরা সফল উদ্যোক্তা হয়ে দেশের অর্থনীতিতে মূল্যবান অবদান রাখতে পারে।