খুলনা | শুক্রবার | ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | ১৫ কার্তিক ১৪৩২

৪ নভেম্বরের মধ্যে একুশে বইমেলার সময় ঘোষণার আলটিমেটাম

খবর প্রতিবেদন |
০৫:৩৬ পি.এম | ৩০ অক্টোবর ২০২৫


আগামী ৪ নভেম্বরের মধ্যে একুশে বইমেলার সময় ঘোষণার আলটিমেটাম দিয়েছে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘আমরা সরকারকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দিচ্ছি। স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিতে হবে যে বইমেলা কত তারিখ থেকে আমরা শুরু করব। আমরা এক তারিখ থেকেই করতে চাই, সেই ঘোষণা চাই। নাহলে আমাদের ফেরাতে পারবেন না। আমাদের লাশের ওপর দিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলা বন্ধ করতে হবে!’

কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘আমরা অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই উদ্‌যাপন করব। তার বাইরে আমরা যাব না। আমরা যেকোনো মূল্যে, যেকোনোভাবে সেটা করব।’

মোহন রায়হান আরও বলেন, ‘আলবেয়ার কামু বলেছিলেন—বই মানুষের এমন এক বন্ধু, যে কখনো প্রতারণা করে না। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে আজকে উচ্চারণ করছি যে, এই বর্তমান সরকারের প্ররোচনায় বই এবার আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে যাচ্ছে। কীভাবে? এই সরকার ঘোষণা দিয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য অমর একুশে বইমেলা স্থগিত।’

কবি মোহন রায়হান আরও বলেন, ‘সরকার বলেছে যে, নির্বাচনের কারণে তারা বইমেলার নিরাপত্তা দিতে পারবে না। নির্বাচনের সময়, রোজার মধ্যে বইমেলা হয়েছে। সেসব সরকার যদি বইমেলার নিরাপত্তা দিয়ে থাকে, এই সরকার কেন পারবে না? এ দেশের জনগণকে কোনো সরকার নিরাপত্তা দেয় না। জনগণের নিরাপত্তা জনগণ নিজেরা নিজেদের দেয়। বরং জনগণ সরকারকে নিরাপত্তা দেয়।’

নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের জন্য বইমেলায় একটা সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বইমেলায় এসে তারা প্রচারণা চালাতে পারবে, লিফলেট দিতে পারবে, জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবে, হ্যান্ডশেক করতে পারবে, ভোট চাইতে পারবে। আমরা লেখক, পাঠক, প্রকাশকদের পক্ষ থেকে, বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে, আমরা তো সেই সুযোগটা তৈরি করে দেব! তাহলে আপনাদের নিরাপত্তার ভয় কোথায়? কিসের নিরাপত্তার ভয়? কার ভয়? কেন আমরা ভয় পাব?’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আয়োজক সংগঠনের কার্যকরী সদস্য খন্দকার শাহ আলম বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও যথাসময়ে তা আয়োজনের ব্যবস্থা করে সরকার শুভবুদ্ধি ও সুবিবেচনার পরিচয় দেবে; লেখক, পাঠক, প্রকাশক—সর্বোপরি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে মনোযোগী হবে এবং মহান একুশের সংগ্রামী, গৌরবময় ঐতিহ্য ও চেতনা সমুন্নত রাখতে ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।’

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য ও মেলা উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক আবুল বাশার ফিরোজ শেখের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহসভাপতি কবি কামরুজ্জামান এবং একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান।