খুলনা | শুক্রবার | ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | ১৬ কার্তিক ১৪৩২

দৌলতপুর সোনালী ব্যাংক শাখার প্রায় ৭ কোটি টাকারপাট জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৩৯ এ.এম | ৩১ অক্টোবর ২০২৫


নগরীর দৌলতপুর সোনালী ব্যাংক শাখার প্রায় ৭ কোটি টাকার পাট জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এর মামলায় দু’জনকে ১০ বছর এবং অপর একজনকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের তিনজনকে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে পৃথক মেয়াদের সাজা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোঃ আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। 
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মেসার্স আকবর আলী এন্ড সন্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ রবিউল হক বিশ্বাস এবং ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোঃ শফিউল হক বিশ্বাস। তাদের দু’জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, দু’জনকে ৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ  দেয়া হয়। এ মামলার অপর আসামি দৌলতপুর সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার প্রাক্তন অফিসার (অগ্রিম) এস এম ইমদাদুল হককে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৩ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। রবিউল হক বিশ্বাস ও শফিউল হক বিশ্বাস দু’ভাই নগরীর দৌলতপুর ৭০, সাতক্ষীরা রোডের বাসিন্দা মৃত আকবর আলী বিশ^াসের ছেলে। ইমদাদুল হক নওগাঁ জেলা সদরের ইলশাবাড়ি এলাকার মৃত আছির উদ্দিন সরদারের ছেলে।  রায় ঘোষণাকালে রবিউল হক বিশ্বাস ও শফিউল হক বিশ্বাস পলাতক ছিলেন। অপর আসামি এস এম ইমদাদুল হক আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ ইয়াছিন আলী।
রাষ্ট্রপক্ষে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)’র আইনজীবী সেলিম-আল-আজাদ জানান ২০০৯-১০ পাট মৌসুমে মেসার্স আকবর আলী এন্ড সন্স লিমিটেডের অনুকুলে লোন ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা বর্ধিত করা হয়। কিন্তু তারা পাট না ক্রয় করে পূর্বের জের গোডাউনে রেখে কাজ চালাতে থাকেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে যাচাইয়ে ৪০৬৬ মণ পাট পাওয়া যায়। স্টক রেজিস্ট্রার অনুযায়ী গুদামে মালামাল মজুদ থাকার কথা ছিল ৫৫,৫২৩ মণ (প্রতি মণ ৪০ কেজি)। সে মোতাবেক (৫৫৫২৩-৪০৬৬)-৫১,৪৫৭ মণ পাট ঘাটতি পাওয়া যায় মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত মৌসুমে ব্যাংক প্রতি মণ পাটের বাজার মূল্য ১৬০০/- টাকা হিসেবে নির্ধারণ করে ঋণ প্রদান করা হয়েছিল। তদনুযায়ী ঘাটতিজনিত পাটের মূল্য দাঁড়ায় মোট ৮,২৩,৩১,২০০/- টাকা। গ্রাহককে প্রদত্ত ঋণটি ২০% মার্জিনে ছিল বিধায় মার্জিনের ২০% বাবদ ১,৬৪,৬৬,২৪০/- টাকা বাদে অবশিষ্ট ৮০% বাবদ ৬,৫৮,৬৪, ৯৬০/- টাকা মূল্যমানের পাট ঘাটতি পাওয়া যায়। এ ঘটনায়  দুনীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনার উপ-সহকারী পরিচালক মোহাঃ মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন (নং- ৭)। ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী পরিচালক মোহাঃ মোশাররফ হোসেন ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন সময়ে মামলার অপর আসামি সোনালী ব্যাংক দৌলতপুর শাখার গোডাউন কিপার সোহেল হোসেন জোয়ার্দ্দার ইন্তেকাল করেন।