খুলনা | শনিবার | ০১ নভেম্বর ২০২৫ | ১৭ কার্তিক ১৪৩২

শ্যামনগরে তিন যুবকের নামে মিথ্যে ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
১১:১৯ পি.এম | ৩১ অক্টোবর ২০২৫


সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ঘর পোড়ানো মামলা তুলে নিতে রাজ না হওয়ায় বাদীর তিন ভাইপোর নামে মিথ্যে ধর্ষণ মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। পরিকল্পিত এই ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ ও হিন্দু যুব পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখা। শুক্রবার বেলা ১১টায় শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের প্রধান ফটকের সামনে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় জেলার আরো কয়েকটি সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়। 
মানবন্ধন কর্মসূচি চলাকালে হিন্দু যুব পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সদস্য সচীব মনোদীপ মন্ডলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি এড. সোমনাথ ব্যাণার্জী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, জেলা পূজা ফ্রন্টের যুগ্ম-আহবায়ক এড. সুনীল কুমার ঘোষ, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, বাসদ নেতা শিক্ষক নিত্যানন্দ সরকার, বাসদ নেতা এড. খগেন্দ্রনাথ ঘোষ, সাংবাদিক শরিফুল­াহ কায়সার সুমন, জাসদ নেতা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, দীলিপ গাইন, সুচিত্রা গাইন, মাধবী মন্ডল, এড. আবুল কালাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে শ্যামনগরের মীরগাং গ্রামের পঁচি ভাংগীর ছেলে জঙ্গল ভাংগীর সঙ্গে একই এলাকার দীলিপ গাইন ও তার ভাইদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়ে গেলেও স্থানীয় জব্বার গাজী, যতীন্দ্রনগরের মাহামুদুল ও অনোয়ারুলসহ একটি মহল জঙ্গল ভাংগীদের পক্ষে ওই সমস্যা নতুন করে উস্কে দিয়েছে। ফলে গত ১৭ অক্টোবর রাত সাড়ে সাতটার দিকে দীলিপ গাইনের পুকুরসহ ৫০ শতক জমি নেট দিয়ে ঘিরে নেওয়ার চেষ্টা করে প্রতিপক্ষ জঙ্গল ভাংগী ও তার ভাইপো সাগর ভাংগী গংরা। একপর্যায়ে পুলিশ আসছে খবর পেয়ে তারা আত্মগোপন করে। 
বক্তারা আরো বলেন, এঘটনার জের ধরে গত ১৭ অক্টোবর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে লুটপাঁ শেষে দীলিপ গাইনের বসতঘর ও রান্না ঘরে আগুন লাগিয়ে ভষ্মিভূত করা হয়। এ ঘটনায় দীলিপ গাইন বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত ২১ অক্টোবর আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা না’মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এসময় আদালত চত্বরে জঙ্গল ভাংগী ও সাগর ভাংগী মামলার বাদিপক্ষের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দেবেন বলে হুমকি দেন।
বক্তারা আরো বলেন, গত ২৬ অক্টোবর ভোর ছয়টার দিকে দীলিপ গাইনের ভাইপো বিকাশ গাইনকে বাড়ি থেকে তুলে এনে ঘর পোড়ানো মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম প্রতিপক্ষ এক ব্যক্তির মাকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানা লকআপে রাখেন। একপর্যায়ে ঘরপোড়ানো মামলা তুলে নিতে রাজী না হওয়ায় পলাশ, তুষার ও বিকাশের নামে ২৭ অক্টোবর ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হয়। 
মানববন্ধন থেকে শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ূন কবীর মোল­া ও উপ-পরিদর্শক জহিরুল ইসলামকে অপসারণ ও পরিকল্পিত ধর্ষণ মামলার সঙ্গে জড়িতদের ডিএনএ টেষ্টের মাধ্যমে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।