খুলনা | মঙ্গলবার | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ | ২০ কার্তিক ১৪৩২

সংকটময় মুহূর্তে দেশ, গণতন্ত্রের দিক নির্ধারণ করবে আসন্ন নির্বাচন

ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের গতিপথ : সিইসি

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৮ এ.এম | ০৪ নভেম্বর ২০২৫


প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, বাংলাদেশ সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। গণতন্ত্রের পথে কীভাবে হাঁটবো সেটা নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের ওপর। আর ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের গতিপথ। সোমবার জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আনসার-ভিডিপির সদস্যদের ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও ৪র্থ ধাপের আনসার কোম্পানি-প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।
রুটিন দায়িত্ব কিংবা চাকরি হিসেবে নেয়নি এ কথা জানিয়ে সিইসি আরও বলেন, গতানুগতিক ধারার বাহিরে গিয়ে কাজের সমাধান করতে হবে। চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের চেয়ার। 
সবার সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব না। বাংলাদেশ সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। গণতন্ত্রের পথে কীভাবে হাঁটবো সেটা নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের ওপর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এআইয়ের অপব্যবহার করে নির্বাচনে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে দুষ্টু লোক, সে ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকার আহŸান জানিয়ে সিইসি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সবাই যাচাই বাছাই করুন, সজাগ থাকুন। 
একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন হবে। গত একবছরে এক লাখ ৪৫ হজার নতুন সদস্য নিয়োগ হয়েছে এ বাহিনীতে।
নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোবাবেলায় অঙ্গীকারবদ্ধ আনসার বাহিনী এ কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন আনসার সদস্যকে মৌলিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ চলবে। ইসিকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। শুধু নির্বাচনী কার্যক্রমে নয় নির্বাচনের প্রচারণামূলক কাজেও সহযোগিতা করা হবে। ভোটারদের করণীয় নিয়েও প্রচারণা চালাবেন তারা। 
অতীতের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে এবার জোরালো ভূমিকা পালন করবে আনসার বাহিনী এ কথা উলে­খ করে তিনি ফের বলেন, ভোটে এবার চ্যালেঞ্জ আছে। সেটা মোকাবেলায় প্রস্তুত করা হচ্ছে এ বাহিনীকে।
ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাদের বাছাই করে বাদ দেয়া হবে এবং নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া হবে না তাদের বলেও জানান তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ নির্বাচনে এবার প্রায় দশ লাখ লোক মোতায়েন হবে। প্রিজাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় দশ লাখ লোক নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। যারা নির্বাচনের ডিউটিতে থাকে মূলত তারা নিজেরাই ভোট দিতে পারেন না। 
তিনি বলেন, আমরা এবার উদ্যোগ নিয়েছি যারা ভোটের ডিউটিতে থাকবেন তারা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন। একটি অ্যাপ চালু করা হবে, যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবেন তারা সবাই রেজিস্ট্রেশন করে নেবেন। আপনাদের বাড়ির ঠিকানায় ব্যালট পৌঁছে যাবে। গাইডলাইন অনুযায়ী ভোট দিতে পারবেন। 
আইনি হেফাজতে যারা কারাগারে রয়েছেন তারাও এদেশের নাগরিক উলে­খ করে সিইসি বলেন, তারাও যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এছাড়াও প্রবাসীও এবার ভোট দিতে পারবেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ভবিষ্যতের জন্য কি বাংলাদেশ রেখে যাবো, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাবো, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাবো কিনা, কীভাবে রেখে যাবো— তা নিয়ে আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়। এটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে রুটিন দায়িত্ব হিসেবে নেইনি, চাকুরি হিসেবে নেইনি, এটাকে আমি নিজের দায়িত্বের মিশন হিসেবে নিয়েছি, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।
আমি গতানুগতিক ধারার কাজে বিশ্বাসী নই উলে­খ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিশেষ করে এই ধরনের সংকটময় মুহূর্তে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় দেশ যখন রয়েছে, এখানে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে হবে না। আউট অব দ্যা ওয়েতে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। মেসেজটা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এটা দিয়ে শুরু হোক সচেতনতা কার্যক্রম। ইসিতে যাচাই বাছাইয়ের জন্য একটি সেল খুলেছি, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সদ্য মিথ্যা যাচাই করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।