খুলনা | বুধবার | ০৫ নভেম্বর ২০২৫ | ২০ কার্তিক ১৪৩২

বিএনপিতে যোগ দিলেন শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

খবর প্রতিবেদন |
১১:০০ পি.এম | ০৪ নভেম্বর ২০২৫


আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের উপ-প্রধান জাতীয় কমিশনার হিসেবে কাজ করছেন।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত ৯টায় গুলশান চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে দলের চাঁদা পরিশোধের মাধ্যমে নতুন সদস্য হয়েছেন স্নিগ্ধ। এ সময় বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। 

এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন সদস্য ফরম গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এবং মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধের পিতা মোস্তাফিজুর রহমান।

কে এই শহীদ মীর মুগ্ধ 
শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তিনি একজন মুক্তপেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কাজ করতেন। আন্দোলনের সময় খাবার পানি এবং বিস্কুট বিতরণ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। মুগ্ধর মৃত্যু কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে।  

‘পানি লাগবে পানি’ ছিলো মুগ্ধের মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ধারণকৃত একটি ভাইরাল ভিডিওর বাক্য, যা আন্দোলনকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার অল্প কিছুক্ষণ আগে মীর মুগ্ধকে একটি ভিডিওতে পানির কেস হাতে নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে পানি বিতরণ করতে দেখা যায়, যেখানে তিনি একাধিকবার বলেন—‘পানি লাগবে কারো, পানি, পানি?’

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই আহত বা ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের পাশে গিয়ে বারবার পানি দিতে এগিয়ে যান এবং ওই দিন সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মুগ্ধ। 

মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মা শাহানা চৌধুরী। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রামরাইল। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও মুগ্ধ ছিলেন যমজ।

মুগ্ধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে এমবিএ করছিলেন। মৃত্যুর সময় তার গলায় বিইউপি আইডি কার্ডটি রক্তমাখা অবস্থায় ছিল।

তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফাইভারে এক হাজারের বেশি কাজ সম্পন্ন করেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি তিনি একজন ভ্রমণপিপাসু, ফুটবলার, এবং বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্য ছিলেন।

ফাইভার ৩১ জুলাই ২০২৪ তারিখে এক ভেরিফাইড অফিশিয়াল পোস্টে জানায়, মুগ্ধ ছিলেন একজন প্রতিভাবান মার্কেটার। বিশেষ করে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় তার ছিল অসাধারণ দক্ষতা।