খুলনা | বুধবার | ০৫ নভেম্বর ২০২৫ | ২১ কার্তিক ১৪৩২

ম্যাক্স সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ থেকে বহিষ্কার আর্থিক প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগে ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি |
১২:২০ এ.এম | ০৫ নভেম্বর ২০২৫


ম্যাক্স সোশ্যাল এন্টার প্রাইজ লিমিটেডের সাবেক সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার মোঃ জালিল শেখ প্রতিষ্ঠানের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ামিন ফারুকসহ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আর্থিক প্রতারণা, জোরপূর্বক সই আদায়, শারীরিক নির্যাতন ও অন্যায়ভাবে তাকে চাকুরি থেকে বহিষ্কারের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে খানজাহান আলী থানা সাংবাদিক ইউনিটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জলিল শেখ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০২১ সাল থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পটুয়াখালি ও খুলনা অঞ্চলের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এবং প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সুনাম বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছেন। কিন্তু ২০২৪ সালের ১২ মে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ামিন ফারুক যোগদানের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, দুর্নীতি ও আর্থিক আত্মসাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। দুর্নীতির পথ সুগম করতে বিনা নোটিশে পটুয়াখালীর ইনচার্জকে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।
তিনি বলেন, এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি, হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রথমে তাকে ওএসডি করে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং পরে মনগড়া অভিযোগ তৈরি করা হয়। পরিস্থিতির চরম সময়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি বড় অঙ্কের আর্থিক অনিয়ম শনাক্ত করে হেড অফিসে জানানোর পর প্রভাবশালী একটি চক্র তাকে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করে।
জালিল শেখের অভিযোগ অফিসে ডেকে নিয়ে  তাকে মারধর করা হয়, ব্ল্যাঙ্ক স্ট্যাম্প ও চেকে জোরপূর্বক সই দিতে চাপ দেওয়া হয় এবং তার নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্র আদায় করে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর তার চঋ ও গ্র্যাচুইটির টাকা আটকে রাখা হয় এবং তার অফিস ল্যাপটপ হ্যাক ও ডাটা ডিলিটের মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়।
তিনি আরও দাবি করেন, প্রোকিউরমেন্ট বিভাগের পুষ্পিকা বড়–য়া ব্যক্তিগত স্বার্থে নিজস্ব লোকদের নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের সইকারী বানান এবং দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করেন। একই নেটওয়ার্কে তোফাজ্জেল/তৌফিকুর রহমান, সনাতন চন্দ্র দে (অপারেশন), মনোজ কুমার (এ্যাকাউন্টস)সহ আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন। এর আগেও সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদ হাসনাতকে ব্ল্যাঙ্ক চেকে সই নিতে বাধ্য করে পরবর্তীতে সরিয়ে দেওয়া হয় বলেও উলে­খ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “যারা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির প্রতিবাদ করছেন তাদের বিরুদ্ধে চলছে মানসিক নির্যাতন, গালিগালাজ, ভয়ভীতি দেখানো ও জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টা। এতে আমার পরিবার, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী বোনের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে মোঃ জালিল শেখ পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন তিনি বলেন দুর্নীতিতে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন ও শক্তিশালী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে,প্রাপ্য পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও সকল বকেয়া দ্রুত পরিশোধ,জোরপূর্বক আদায়কৃত চেক, স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষরকে অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করা। তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। স্বাধীন, স্বচ্ছ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
তিনি জানান, তিনি আইনি লড়াই শুরু করেছেন; তবে একটি প্রভাবশালী চক্র মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি সাংবাদিক ও জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের সামনে ব্ল্যাঙ্ক চেক, সইকৃত নথি, ব্যাংক সই কাগজ, ইমেইল/মেসেজের প্রিন্ট, চঋ ও গ্র্যাচুইটির বিবরণ, ল্যাপটপ/ডাটা সংক্রান্ত কাগজপত্র, ছবি ও ভিডিওসহ বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করেন।