খুলনা | বুধবার | ০৫ নভেম্বর ২০২৫ | ২১ কার্তিক ১৪৩২

সতের বছর পর চিতলমারী ব্যবসায়ীদের নির্বাচনকে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা

এস এস সাগর, চিতলমারী |
০৪:৫৪ পি.এম | ০৫ নভেম্বর ২০২৫


দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনকে সফল করতে বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা আহবায়ক কমিটির নেতারা ৬ সদস্যর একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

আজ বুধবার (০৫ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বুলু জানান আগামী ২৮ নভেম্বর বাজার কমিটির নির্বাচন হতে পারে। এ লক্ষে মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) রাতে এক বৈঠক করে তফশীল ঘোষণার দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। তবে সাধারণ ভোটারদের (ব্যবসায়ী) উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যেও নানা প্রতিক্রীয়া সৃষ্টি হচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ তুলেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৮ সালে ডিসেম্বরে চিতলমারী বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। নির্বাচনে শেখ হাফিজুর রহমান সভাপতি পদে এবং মোঃ শহর আলী গাজী সাধারণ সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। কিছুদিন পর ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি শহীদুল ইসলাম লিটন মুন্সি আহবায়ক হন। তাঁর দীর্ঘদিনের ক্ষমতায়নের ফলে আর কোন নির্বাচন হয়নি। গত ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোঃ সোয়েব হোসেন গাজীকে আহবায়ক এবং মোঃ মনিরুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

আহবায়ক কমিটি চিতলমারী বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনার জন্য শেখ শাহাদাৎ হোসেন বুলুকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং মোঃ নোয়াব আলী শেখ, মোঃ সোহেল সুলতান মানু, গাজী মাসুদ রানা, বাদল সাহা ও সোহাগ মুন্সিকে কমিশনার ঘোষণা করে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। উক্ত কমিটি বাজারের ব্যবসায়ীদের তথ্য সংগ্রহসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করেন। তাদের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ভোটার সংখ্যা ৭০৭ জন এবং কয়েক দফা বৈঠক শেষে নির্বাচনের দিন তারিখ চুড়ান্ত করা হয়েছে।

চিতলমারী উপজেলা সদরের বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বুলু জানান, এবার ব্যবসায়ীদের ৫টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৮ নভেম্বর তফশীল ঘোষণা করা হবে। তফশীল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বিক্রি ১০ ও ১১ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র জমা ১২ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১৫ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ ১৬ নভেম্বর এবং ২৮ নভেম্বর নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে।

অপরদিকে, দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক এলাকায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা কে কাকে ভোট দিবেন এ নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। ভোটারদের আলোচনায় এ পর্যন্ত প্রার্থীর তালিকায় যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন সভাপতি পদে চিতলমারী বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহর আলী গাজী, চিতলমারী বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক ও বিএনপি নেতা মোঃ সোয়েব হোসেন গাজী, সাধারন সম্পাদক পদে চিতলমারী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শেখ আসাদুজ্জামান আসাদ ও কোষাধাক্ষ্য পদে মোঃ লিটন শেখ।

এ ব্যপারে নির্বাচন কমিশনার গাজী মাসুদ রানা বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটিতে পদের সংখ্যা ছিল ২১টি। কিন্তু এখানে নির্বাচনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫টি পদ। এ ছাড়া সদস্য সংগ্রহ ফি ও মনোনয়নপত্রের দাম অনেক বেশী ধরা হয়েছে। আবার শুনতে পাচ্ছি একটি চক্র নির্বাচন বানচাল করে সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’

চিতলমারী বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক মোঃ সোয়েব হোসেন গাজী বলেন, ‘২৮ নভেম্বর নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমি প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তাতে মনে হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চিতলমারী বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন হবে না।’