খুলনা | শুক্রবার | ০৭ নভেম্বর ২০২৫ | ২২ কার্তিক ১৪৩২

১৬ সংস্থার বিষয়ে দাবি-আপত্তি চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি

৬৬ দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন ইসির

খবর প্রতিবেদন |
১১:৩৪ পি.এম | ০৬ নভেম্বর ২০২৫


নানা বিতর্ক শেষে ৬৬টি বেসরকারি সংস্থাকে স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন পেয়েছে তারা। এছাড়া আরও ১৬টি সংস্থার বিষয়ে দাবি আপত্তি জানতে চেয়ে ১৫ কার্যদিবস সময় দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইসি।

আজ বৃহস্পতিবার ইসির পরিচালক (জনসংযোগ) রুহল আমিন মল্লিকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, নিবন্ধনের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে প্রথম পর্যায়ে এই ৬৬টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছে। নিবন্ধনপ্রাপ্ত এসব সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা-২০২৫ অনুসারে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।

এর আগে অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ৭৩টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রাথমিক তালিকা নির্ধারণ করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ইসি। তবে এই তালিকা প্রকাশের পরপরই এ নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা ওঠে। জানা যায়, নিবন্ধনযোগ্য ৭৩ পর্যবেক্ষক সংস্থার অনেকগুলোই নামসর্বস্ব। যাদের অফিস বাসা-বাড়ি, পরিত্যক্ত ঘর ও জঙ্গলে। এরপর পর্যবেক্ষক সংস্থার চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন করে তদন্ত শুরু করে ইসি। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ৬৬ দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিল ইসি।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২৩ সালের নীতিমালা বাতিল ও তৎকালীন ৯৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করে নতুন নীতিমালা জারি করেন নাসির উদ্দীন কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৯৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। কিন্তু ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন বিষয়ে বিদ্যমান নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়।

আগের পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পর্যবেক্ষক নিবন্ধন প্রথা শুরু করে ইসি। সে সময় ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল। ওই নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষক ছিল এক লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০১৪ সালে ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন পর্যবেক্ষক ভোট দেখেছেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৮টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮১টি দেশি সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৯৬টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮০টির মতো সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট দেখেছেন।

যারা নিবন্ধন পেয়েছে
ইসি’র চূড়ান্ত নিবন্ধন পাওয়া সংস্থাগুলো হচ্ছে- পাথওয়ে, পল্লীশ্রী, রিসডা বাংলাদেশ, রশ্মি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আরএইচডিও), ইন্টিগ্রেটেড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (আই.সি.ডি.এস), বাকেরগঞ্জ ফোরাম, একটিভ এইড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন, সাথী, বকুলতলী মহিলা সংসদ (বিএমএস), অ্যাসোসিয়েশন অব মুসলিম, ওয়েলফেয়ার অ্যাজেন্সিস ইন বাংলাদেশ (এএমডব্লিএবি), হোপ, অধিকার, আরপিও ফাউন্ডেশন, অর্গানাইজেশন ফর সোশ্যাল এডভান্সমেন্ট (উষা), সমাজ উন্নয়ন পল্লী সংস্থা (এসডিআরএস), হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস), সংগতি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ (এডাব), লাইট হাউজ, রূপান্তর, সোসাইটি ফর ব্রাইট সোস্যাল সার্ভিসেস, আবদুল মোমেন খান মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে), চাঁদ মানব উন্নয়ন সংস্থা, ব্যুরো অফ সোসাল ওয়াচ, অন্তরঙ্গ সমাজ কল্যাণ সংস্থা (এএসকেএস), প্রফেশনাল রিসার্স অ্যাডভোকেসি ট্রেনিং অ্যাকশন ইয়ার্ড (প্রত্যয়), মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (মওসুস), বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ইকোলোজিকাল রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (বি.এস.ই.আর.আই) ও আশ্রয় ফাউন্ডেশন।

তালিকায় আরও রয়েছে- কর্ম উন্নয়ন কেন্দ্র (ডব্লিউ.ডি.সি), আলোকিত সমাজ কল্যাণসংস্থা, বিচরণ কল্যাণসংস্থা, ইমপ্যাক্ট ইনিশিয়েটিভ, অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি), সেবা ফাউন্ডেশন, রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ (র‌্যাক বাংলাদেশ), ডেমোক্রেসিওয়াচ, প্রত্যয় সোস্যাল ফাউন্ডেশন, ভলান্টারি রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ডিআরডিএস), রুর‌্যাল অ্যান্ড আরবান পুওর’স পার্টনার ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (আরএসএলইউআরপিএসএ), অ্যাসোসিয়েশন ফর সোসিও ইকোনোমিক অ্যাডভান্সমেন্ট (এসিয়া), চারু ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (সিডিএ), স্কোপ, পার্টিসিপেটরি অ্যাডভান্সমেন্ট সোস্যাল সার্ভিস (পাস), কমিউনিটি এ্যাসিস্ট্যান্স ফর রুরাল ডিভেলাপমেন্ট (কার্ড), সেন্টার ফর রাইটস্ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (সিআরডি), ফ্যাসিলিটিস ফর এগ্রিকালচার রিহ্যাবিলাইজেশন অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (ফেয়ার), অগ্রগতি সেবা সংস্থা (অসেস), দিনাজপুর পল্লী উন্নয়ন প্রচেষ্টা (ডিপিইউপি), সমাহার, মাল্টিডিসিপ্লিনারি রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, বিয়ান মনি সোসাইটি (বিএমএস), গরীব উন্নয়ন সংস্থা (জি, ইউ,এস), সচেতন নাগরিক সোসাইটি, দীপ্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা (ডিএমইউএস), নজরুল স্মৃতি সংসদ (এনএসএস), ব্রতী সমাজ কল্যাণসংস্থা, মানব সহায়ক কেন্দ্র (এমএসকে), বুরাল ভিশন (আর.ডি), গ্রামীণ ইকোনোমিক অ্যান্ড সোশাল এডভান্সমেন্ট (জিসা), মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন, ডাক্তারবাড়ি সোস্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (ডিএডব্লিউএফ), ইয়ুখ ইনিশিয়েটিভ ফরসোসিও ইকনোমিক অ্যাকটিভিটি (ইযিয়া), মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন এবং দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা।