খুলনা | মঙ্গলবার | ১১ নভেম্বর ২০২৫ | ২৭ কার্তিক ১৪৩২

বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহাল, জেলা জুড়ে আনন্দের বন্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট |
০১:৫০ এ.এম | ১১ নভেম্বর ২০২৫


বাগেরহাট জেলার সংসদীয় আসন চারটি বহাল রাখার আদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সাল হাসান আরিফ এ রায় দেন। একই সাথে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অবৈধ উল্লেখ করেছেন উচ্চ আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন। তাকে সহযোগিতা করেন এড. বিপ্লব কুমার পোদ্দার, এড. ফয়সাল মোস্তফা, এড. রাজিয়া সুলতানা, ব্যারিস্টার কাজী সামান্তা এনাম, এড. আমিনুজ্জামান সোহাগ, এড. এনামুল ইসলাম, এড. মাহবুবুর রহমান, এড. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ ইকরামুল কবির। 
এদিকে আসন ফিরে পাওয়ায় বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে মিছিল করেছে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। এদিন সন্ধা সাতটায় বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল বের করে। শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেসক্লাবের সামনে এসে মিলিত হয়। নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন বিএনপি’র নেতারা। 
আসন ফিরে পাওয়ায় মাগরিবের নামাজের পরে বাগেরহাট পুরাতন কোর্ট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত হয়েছে। দোয়া মোনাজাতে জেলা বিএনপি ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম অংশগ্রহণ করেন। 
রিটকারী আইনজীবি ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মাদ জাকির হোসেন বলেন, আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ বিজয় বাগেরহাটের ১৮ লক্ষ মানুষের, পুরো বাগেরহাট জেলার। 
বাগেরহাট জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের চারটি আসন ছিল। হঠাৎ একটি আসন কমিয়ে দেওয়ায় আমরা বিক্ষোভ করেছি, হরতাল করেছি। আমরা আইনের আশ্রয়ও নিয়েছিলাম। আজ উচ্চ আদালত আমাদের আসন ফিরিয়ে দিয়েছেন। পুরো বাগেরহাটবাসী খুশি। আল্লাহর রহমতে আর কোন শক্তি আমাদের আসন ফিরিয়ে নিতে পারবে না। 
গেল ৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকেই বাগেরহাটবাসী আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন নেতা-কর্মীরা। এরপরেও ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন জারি রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। 
পরে ৭ সেপ্টেম্বর চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে বাগেরহাটের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে দু’টি রিট করেন। বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী,  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি একটি রিটদায়ের করে। অপরটি করেন চিতলমারী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মজিবর রহমান শামীম। রিটে বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব  ও এ্যার্টনি জেনারেল কে বিবাদী করা হয়। দীর্ঘ শুনানীর পরে আদালত এই রায় প্রদান করলেন।