খুলনা | বুধবার | ১২ নভেম্বর ২০২৫ | ২৮ কার্তিক ১৪৩২

জবিতে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ তিন সহকারী প্রক্টরসহ আহত ১২

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৩ এ.এম | ১২ নভেম্বর ২০২৫


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শাখা ছাত্রদলের দুই গ্র“পের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন সহকারী প্রক্টরসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে ছাত্রদলের বাসেত গ্র“প ও সুমন গ্র“পের নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেট, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে সমঝোতা বৈঠক চলাকালে তিন দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউদ্দিন সাজিদ, আল-আমিন, আশরাফুল, প্রত্যয়, ইব্রাহিম, জনি ও জাহিদ; রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদী এবং বাংলা বিভাগের ছাব্বীর।
জানা যায়, আহত সামিউদ্দিন সাজিদ ও ছাত্রদলের আহŸায়ক সদস্য জাহিদ হাসান জনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত এবং জাফর আহমেদ গ্র“পের অনুসারী। অন্যদিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদী, ছাত্রদলের আহŸায়ক সদস্য মাশফিক রাইন, আতাউল্লাহ আহাদ ও বাংলা বিভাগের আশরাফুল ইসলাম সুমন সরদার গ্র“পের অনুসারী।
জানা যায়, সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে আস-সুন্নাহ পরিবহনের বাসে মার্কেটিং বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজিদ ও তার বন্ধুরা কথা বলছিলেন। এ সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদী তাদের কথা বলতে নিষেধ করেন এবং হুমকি দেন-‘তোমাকে দ্বিতীয় গেটে ঝুলিয়ে রাখব।’ পরে সাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেট ও হলে গিয়েও সাজিদের খোঁজ নেন।
মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় গেটের সামনে সাজিদ তার বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকলে সাদী, আহŸায়ক সদস্য মাসফিক, বাংলা বিভাগের আশরাফুল ও যুগ্ম-আহŸায়ক আরাফাত সেখানে গিয়ে তাকে ডাকেন। কিছুক্ষণ পর সাদী ও তার সহযোগীরা অতর্কিতভাবে সাজিদের ওপর হামলা করেন। তাকে বাঁচাতে গেলে আল-আমিন, প্রত্যয়, ইব্রাহিম ও জাহিদের ওপরও হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাজিদ দ্বিতীয় গেটের সামনে এক নেতার সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় পেছন থেকে সাদীর অনুসারীরা এসে তাকে আঘাত করতে শুরু করেন। ছাত্রদলের সিনিয়র নেতা-কর্মীরা ঠেকাতে গেলে তাদের সামনেই পিটুনি চলে।
পরে দ্বিতীয় দফায় শান্ত চত্বরে ফের সংঘর্ষ হয়। সেখানে চেয়ার দিয়ে আল-আমিনের মুখে আঘাত করা হয়। উপস্থিত ছিলেন আহŸায়ক মেহেদী হাসান হিমেল। তিনি ও অন্য সিনিয়র নেতারা দু’পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ রইছ উদ্দিনের কক্ষে সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সাদীকে সেখানে আনার সময় তৃতীয় দফায় আবার সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে জনি, রাব্বীসহ আরও কয়েকজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মোঃ নঈম আক্তার সিদ্দিকী, ফেরদৌস হোসেন ও মাহাদী হাসান জুয়েলসহ কয়েকজন শিক্ষকও আহত হন। শিক্ষকদের আহতের ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করে কিছু শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে দুই বিভাগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পরে তা বড় আকার ধারণ করে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে, তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।