খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

পরিবেশ-প্রতিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি

খবর প্রতিবেদন |
০৯:০২ এ.এম | ২০ জুন ২০২১

পরিবেশ-প্রতিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে নগর, গ্রামীণ এবং আঞ্চলিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। গতকাল শনিবার (১৯ জুন) অনলাইন প্লাটফর্মে ‘বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারে পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক পরিকল্পনা সংলাপে এ দাবি জানানো হয়।

সংলাপে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিককালে মানব সভ্যতার উন্নয়নের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্রমাবনতি প্রাণীদের অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, পরিবেশ সম্পর্কিত অসচেতনতা, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও সুষ্ঠু নজরদারির অভাবে দেশের বিভিন্ন নগর-গ্রামীণ ও আঞ্চলিক এলাকায় বিপন্ন হচ্ছে প্রাণ প্রকৃতি। ধ্বংস হচ্ছে জীব-বৈচিত্র্য।

তারা বলেন, প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশকে ধ্বংস করে উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না। সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকলে ও রাজনৈতিক দৃঢ়তা থাকলে পরিবেশ-প্রতিবেশকে সমুন্নত রেখে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব।

বিআইপির সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের বিভিন্ন পরিকল্পনা নীতিতে পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আন্তরিক স্বদিচ্ছা থাকলে বিদ্যমান পরিকল্পনা এবং আইন-নীতিমালার অনুসরণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়েই আমাদের ভৌত ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব।

বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, পরিবেশের প্রতি আমাদের সংবেদনশীল হতে হবে এবং পরিবেশের প্রতি যত্নশীল থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে হবে। উন্নয়ন সংক্রান্ত সকল নীতিমালায় পরিবেশের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে এবং পরিবেশ নিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখেই আমাদের পরিকল্পনা ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাশেম বলেন, পরিবেশ রক্ষায় গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ব্যর্থতার মূলে রয়েছে সমন্বয়হীনতা ও পরিকল্পনাকে বুঝতে না পারা। বিভিন্ন সময়ে গৃহীত নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনাগুলোর মালিকানা না থাকায় সেগুলোর বাস্তবায়ন হয় না। এছাড়াও বিভিন্ন শহরের গৃহস্থালি বর্জ্য পানির ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক আলাদা না করার ফলে নদী-খালের পানি দূষিত হচ্ছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সহকারী অথরাইজড অফিসার পরিকল্পনাবিদ তামান্না বিনতে রহমান বলেন, ঢাকার প্রস্তাবিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে এবং উদ্ভিদ ও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় সুপারিশমালা প্রদান করা হয়েছে। বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারের জন্য উন্নয়ন কার্যক্রমে সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় সাধন করাকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিল্প কারখানাগুলো কোথায় হবে তারও একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রস্তাবিত ড্যাপে উল্লেখ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে শিল্পায়ন করা হলে পরিবেশ বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব।

পরিকল্পনা সংলাপে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় বিআইপির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- পরিবেশ দূষণ রোধে আবর্জনা সংগ্রহ, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুনর্ব্যবহার এবং নিষ্কাশনের সমন্বিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা করা। শিল্প-কারখানায় ইটিপি ব্যবহার না করায় জীব-বৈচিত্র্য (বায়ু, পানি, শব্দ) ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ছে, ইটিপিবিহীন শিল্প কারখানা বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। ভূমি পরিকল্পনার মাধ্যমে শিল্প-কারখানার জন্য জায়গা বরাদ্দ করা।