খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৩ নভেম্বর ২০২৫ | ২৯ কার্তিক ১৪৩২

আচরণবিধি ভঙ্গ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি সিইসির

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৭ পি.এম | ১৩ নভেম্বর ২০২৫


আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ.এম.এম. নাসির উদ্দিন। তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না—যেখানেই ভঙ্গ হবে, নির্বাচন কমিশন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতারও আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দিনের প্রথম সেশনের সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, আমরা রেফারি, আপনারা খেলোয়াড়। রেফারি হিসেবে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকেই আমরা নির্বাচন পরিচালনা করতে চাই। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু খেলা সম্ভব নয়।

নাসির উদ্দিন বলেন, আচরণবিধির খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশের পর বহু রাজনৈতিক দল ও সংস্থার লিখিত মতামত পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে আচরণবিধি ভঙ্গের কোনো ঘটনা সহ্য করা হবে না।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ইতোমধ্যে পোস্টার লাগানো শুরু হয়েছে, অথচ আমরা পোস্টার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছি। যারা লাগিয়েছেন, তারা নিজেরাই সরিয়ে ফেলুন। এখন থেকে এসব আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে এবং আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।

সিইসি আরও বলেন, নিবন্ধিত দল আমাদের কাছে ৫৪টি। বড় বা ছোট কোনো দল নেই—সবাই সমান। তাদের প্রত্যেকের মতামত আমাদের কাছে মূল্যবান।

‘আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—একটা সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা অপরিহার্য। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং পরে—এই তিন পর্যায়েই দলগুলোর অংশগ্রহণ ও সহায়তা দরকার,’ যোগ করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশন প্রধান বলেন, আমাদের ওপর অতিরিক্ত দায়িত্ব এসে পড়েছে—বিদেশে ভোটগ্রহণ, সরকারি কর্মকর্তাদের ভোটের ব্যবস্থা এবং সোশ্যাল মিডিয়া অপব্যবহার মোকাবিলা করা। আগের কমিশনের এসব কাজ ছিল না। এখন আমাদের অনেক ফ্রন্টে একসঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।

চলমান আলোচনায় থাকা রেফারেন্ডাম প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, রেফারেন্ডাম নিয়ে এখনো আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাইনি। তবে আলোচনায় বিষয়টি আছে, প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইসির আলোচ্যসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
তফসিল ঘোষণার পূর্বে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলসমূহের করণীয়
তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি প্রতিপালন
আচরণবিধি অনুসারে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির অঙ্গীকারনামা সম্পাদন
প্রার্থীদের সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারদের অঙ্গীকারনামা সম্পাদন
Out of Country Vote (OCV) ও In Country Postal Vote (ICPV) বাস্তবায়ন
তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনি এজেন্ট নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা
বিভ্রান্তিকর তথ্য (Misinformation) ও মিথ্যা প্রচার (Disinformation) প্রতিরোধ
নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)–এর অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও লিঙ্গ, বর্ণ ও ধর্ম নিয়ে বৈষম্য না করা
ধর্মীয় উপাসনালয়কে রাজনৈতিক প্রচারণায় ব্যবহার না করা
এআই–নির্মিত ভিডিও দ্বারা প্রতিপক্ষ বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করা
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে প্রথম দিনের প্রথম সেশনে যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে -লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশ কংগ্রেস,বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।