খুলনা | রবিবার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫ | ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

নির্বাচনে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনীর ১ লাখ সদস্য

জনগণ নির্বাচনমুখি হয়ে গেলে কোনো কিছু তাদেরকে বাধা দিয়ে রাখতে পারে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩০ এ.এম | ১৬ নভেম্বর ২০২৫


আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর এক লাখ সদস্য মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হবে এবং নির্বাচনে সেনাবাহিনীর এক লাখ সদস্য মাঠে থাকবে। এছাড়া দেড় লাখ পুলিশ থাকবে, ৩৫ হাজার বিজিবির সদস্য মাঠে থাকবে এবং সঙ্গে নেভি, কোস্টগার্ডও থাকবে। অতএব, নির্বাচনে কোনো সমস্যা হবে না। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।  পটুয়াখালী সফরকালে শনিবার দুপুর ২টায় সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে এটা তো কনফার্ম। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার তা নিয়েছে। এটার জন্য কোনো শঙ্কা নেই, কোনো বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা নেই, কোনো চ্যালেঞ্জিং নেই। আমরা যার যার দায়িত্ব ভালোভাবে করতে পারবো’।
তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্র“য়ারিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার আমরা তা নিয়েছি এবং প্রশিক্ষণ চলছে। 
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ নির্বাচনমুখি হয়ে গেলে কোনোকিছু তাদেরকে বাধা দিয়ে রাখতে পারে না।  তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আরেকটি ফ্যাক্টর হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। তারা যখন নির্বাচনমুখি হয়ে যাবো; তখন আর কোনো সমস্যা থাকে না। আমার মনে হয়, তারা নির্বাচনমুখি হয়ে গেছে এবং অনেক দল ইতোমধ্যে তাদের প্রার্থিতা ঘোষণা করে ফেলেছে। 
তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালীতে ৭ বা ৮ বছর আগে একবার এসেছিলাম। আজ থেকে ৬০ বা ৬৫ বছর আগে। সেই সময়ের কোনোকিছু আজ মনে নেই। আজকের পটুয়াখালী শহরটি দেখতে অনেক সুন্দর, এবং নিট এ্যান্ড ক্লিন। আমার কাছে শহরটি ভালো লেগেছে। 
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ৯ দিনের জন্য বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী মাঠে নামবে। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে পাঁচ দিন, নির্বাচনের দিন একদিন এবং নির্বাচনের পরে তিন দিন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। তবে দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী এই সময়সীমা সমন্বয় করা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এখন মাঠে আছে সেনাবাহিনীর ৩০ হাজার সদস্য। নির্বাচনের সময় প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে। বিজিবি থাকবে প্রায় ৩৫ হাজার, নৌবাহিনী পাঁচ হাজার, কোস্টগার্ড চার হাজার, র‌্যাব প্রায় আট হাজার এবং আনসার বাহিনীর সদস্য থাকবে সাড়ে পাঁচ লাখের মতো। নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় আনসার এবার বড় ভূমিকা পালন করবে। তাদের জন্য অস্ত্র এবং বডি ক্যামেরাও সরবরাহ করা হবে।
নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সন্দেহের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইলেকশন খুবই শান্তিপূর্ণভাবে হবে, এ নিয়ে সন্দেহের কিছু নেই।
সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে যে সরকার পতন হয়েছে তা কোনো তিনজনের কারণে হয়নি। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণেই সরকার পতন ঘটেছে। আপনারা দেখেছেন, কীভাবে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তাদের আত্মীয় স্বজনরা পালিয়েছে। এটি একজন বা দু’জনের কারণে হয়নি, হয়েছে জনগণের ইচ্ছার কারণে।
মতবিনিময় শেষে তিনি পটুয়াখালী পুলিশ লাইন্স ও কোস্টগার্ড স্টেশন পরিদর্শন করেন। পরে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পটুয়াখালী পুলিশ লাইনস ও কোস্টগার্ড বেজ পরিদর্শন করেন।