খুলনা | মঙ্গলবার | ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়ায় যা বলল ভারত

খবর প্রতিবেদন |
১০:২৫ পি.এম | ১৭ নভেম্বর ২০২৫


মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ভারতে পলাতক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায় নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারত সরকার।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায় প্রত্যক্ষ করেছে ভারত। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা। এই লক্ষ্যে আমরা সর্বদা সকল অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করব।’

এরআগে রায় ঘোষণার পরপরই ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে হস্তান্তরের জন্য নয়াদিল্লি প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এ বিষয়ে ভারতের বিবৃতিতে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

এদিকে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে।’

এর আগেও কয়েক দফায় শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছিল বাংলাদেশ। এজন্য চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। যদিও ভারত এ ধরনের অনুরোধে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ভারত ফেরত দেবে কি না, সেই প্রশ্ন করছেন অনেকে।

এরআগে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অন্তর্বর্তী সরকারকে এই নির্দেশ দিয়েছেন।

রায়ে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দেশে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।