খুলনা | শুক্রবার | ২১ নভেম্বর ২০২৫ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

জনগণ আস্থা না পেলে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রূপ পায় না

নির্বাচন আয়োজনে নাগরিকদের মধ্যে শঙ্কা আছে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:২৪ এ.এম | ২১ নভেম্বর ২০২৫


নির্বাচন আয়োজনকে কেন্দ্র করে নাগরিকদের মধ্যে শঙ্কা  তৈরি হয়েছে। এই শঙ্কা দূর করে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার খুলনায় নাগরিক প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে আয়োজিত প্রাক-নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে নাগরিক ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে। নাগরিকদের কণ্ঠস্বর রাজনৈতিক নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ইশতেহারে সংযুক্ত হলেই তা বাস্তবায়িত হয় না; তাই সবারই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সংস্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বন্দর ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করতে হবে। এ জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু সঠিক সংস্কার যদি বেঠিক পদ্ধতিতে হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কাক্সিক্ষত ফল দিতে পারে না। বন্দর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে অস্বচ্ছতা ও ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, তার কারণে আমরা সুফল থেকে বঞ্চিত হবো।
সভায় আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা আগামী নির্বাচনকে ঘিরে তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেন। সেখানে কর্মসংস্থান, উপকূলীয় মানুষের সুবিধা বৃদ্ধি, সুন্দরবন সংরক্ষণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নসহ নানা দাবি উঠে আসে। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক নেতারা তাদের করণীয় নিয়ে মতবিনিময় করেন এবং সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণে আগামী সরকার কাজ করবে বলে আশ্বাস দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার খুলনায় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম, বাংলাদেশ আয়োজিত আঞ্চলিক পরামর্শসভায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন জনগণ আস্থা না পেলে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রূপ পায় না। তাই মুক্ত আলোচনা, স্বচ্ছতা ও সততার ভিত্তিতে আস্থা পুনরুদ্ধার সময়ের দাবি। দেশ নির্বাচনমুখী হয়ে উঠছে, নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু আমরা কেমন নির্বাচন পাব-সেই প্রশ্ন জনগণের মনে রয়ে গেছে।
পরামর্শ সভায় ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দল গুলোর জন্য সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে নাগরিক ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে। নাগরিকদের কণ্ঠস্বর সকল নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। শুধুমাত্র ইশতেহারে সংযুক্ত হলে তা বাস্তবায়িত হয় না। তাই সকলকে যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে জানান তিনি। 
এ পরামর্শ সভায় নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দল গুলোর জন্য সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে নাগরিক ইসতেহার তৈরির কাজ চলছে। নাগরিকদের কণ্ঠস্বর সকল নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। শুধুমাত্র ইসতেহারে সংযুক্ত হলে তা বাস্তবায়িত হয় না। তাই সকলকে যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে জানান তিনি। 
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভাবনা বহুদিন ধরে আলোচিত হলেও বাস্তবায়ন এখনো দৃশ্যমান নয়। পদ্মা সেতু চালুর পর প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। জমির মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কর্মসংস্থান বা শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি বাড়েনি।
তিনি আরো বলেন, এলাকা থেকে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের অবশ্যই আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রতিশ্রæতি ইশতেহারে দিতে হবে। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম পরবর্তী সময়ে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে জবাবদিহিতা তৈরি করবে।’
সভায় সমাপনী বক্তৃতা করেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি এড. শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, এনসিপির ডাঃ আব্দুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন  সামাজিক সংগঠনের নেতারা আগামী নির্বাচনে তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সেখানে উঠে আসে কর্মসংস্থান, উপকূলীয় মানুষের সুযোগ সুবিধা, সুন্দরবন রক্ষা, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নানা রকম প্রত্যাশা। 
পরামর্শ সভায়, খুলনা ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক, গবেষক, রাজনৈতিক দলসমূহের স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধি, আইনজীবী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি স্থানীয় উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেন।