খুলনা | শনিবার | ২২ নভেম্বর ২০২৫ | ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

নাটকীয় সুপার ওভারে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১১:১৮ পি.এম | ২১ নভেম্বর ২০২৫


আশাজাগানিয়া ম্যাচে অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলে নিশ্চিত জয়ের পথ নিজেদের হাতেই কঠিন করে তোলে বাংলাদেশ। সেই সুযোগে শেষ মুহূর্তে ম্যাচটি টাই করতে সক্ষম হয় ভারত। তবে সব আক্ষেপ মুছে দেন পেসার রিপন মণ্ডল। নাটকীয় সমাপ্তির এই জয়ে বাংলাদেশের নায়ক ডানহাতি পেসার রিপন মন্ডল। সুপার ওভারে প্রথম দুই বলেই ভারত ‘এ’ দলের দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন রিপন। এরপর ১ রানের লক্ষ্যে নামা বাংলাদেশ প্রথম বলে উইকেট হারানোর পর ওই ওয়াইডের রানেই পেয়েছে জয়ের দেখা।

সুপার ওভারের শুরুতেই টানা দুই ডেলিভারিতে দুই ভারতীয় ব্যাটারকে বিদায় করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রিপন। নাটকীয়তায় ভরা সেই সুপার ওভারেও উত্তেজনার ঘাটতি ছিল না। তবুও শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশই—নিয়েছে দুর্দান্ত এক জয়।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) কাতারের দোহায় এশিয়া কাপ রাইজিং স্টার্সের সেমিফাইনালে ভারতকে সুপার ওভারে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে আকবর আলীর নেতৃত্বাধীন দল।

সুপার ওভারের আগে চরম নাটকীয়তা ছিল ২০ ওভারের মূল খেলায়। কাতারের দোহায় প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ ‘এ’ দল করে ৬ উইকেটে ১৯৪। তাড়া করতে নামা ভারত ‘এ’ দলের শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২১ রান, হাতে ছিল ৫ উইকেট।

ওই মুহূর্তে বল হাতে নিয়ে ৬ বলে মাত্র ৫ রান দেন রিপন, তুলে নেন ১টি উইকেটও। শেষ ওভারে বোলিংয়ে গিয়ে রাকিবুল হাসান প্রথম পাঁচ বলে দেন ১২ রান। ভারতের দরকার পড়ে ১ বলে ৪ রান। নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় শেষ বলেই।

বাউন্ডারির চেষ্টা করলেও ব্যাটসম্যান হার্শ দুবের শট চলে যায় সোজা লং অন ফিল্ডারের কাছে। হতাশায় আচ্ছন্ন দুবে অনেকটা অনিচ্ছাতেই দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড়ান। এ দিকে উইকেটকিপার আকবর বল হাতে পেয়ে স্টাম্প ভাঙার চেষ্টা করেন। ভেবেছিলেন দুবে রানআউট হবেন, কিন্তু স্টাম্প তো ভাঙেইনি, কোনো ফিল্ডারও ছিলেন না কাছাকাছি। ফলাফল: ভারতের দুই ব্যাটসম্যানই সুযোগ পেয়ে তৃতীয় রান নিয়ে নেন। ম্যাচ হয়ে যায় টাই।

এরপর সুপার ওভারে আবারও জ্বলে ওঠেন সেই রিপনই। তার প্রথম বল ছিল ইয়র্কার, স্ট্রাইকে থাকা ভারত অধিনায়ক জিতেশ শর্মা রিভার্স–শট খেলতে গিয়ে বোল্ড। পরের বল তুলে মারতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দেন আশুতোষ শর্মা।

ভারত ০ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের দরকার পড়ে ১ রান। কিন্তু শুরুতে স্ট্রাইক নেওয়া ইয়াসির আলী প্রথম বলেই লং অনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আকবর ব্যাট করতে নামার পর সুয়াশ দেন ওয়াইড, ‘মুক্তির আনন্দে’ দুহাতে মোনাজাত ধরেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক।

বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৯৪ রানের পেছনে মূল অবদান হাবিবুর রহমান ও এসএম মেহরবের। ওপেনিংয়ে নামা হাবিবুর ৩ চার ৫ ছক্কায় ৪৬ বলে করেন ৬৫ রান। আর শেষ দিকে মেহরব মাত্র ১৮ বলের ইনিংসে ৬ ছক্কা ১ চারে অপরাজিত থাকেন ৪৮ রানে।

বাংলাদেশ ‘এ’ দল উনিশতম ওভারে ২৮ আর বিশতম ওভারে ২২ রান নিয়ে সংগ্রহটা দুই শর কাছাকাছি নিয়ে যায়, যা বৈভব সূর্যবংশী (১৫ বলে ৩৩) ও প্রিয়াংশ আর্যের (২৩ বলে ৪৪) ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে তাড়া করার পথেই ছিল ভারত। তবে শেষের উত্থান–পতন আর নানা নাটকীয়তার পর হেসেছে বাংলাদেশই।

রোববারের ফাইনালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান–শ্রীলঙ্কার মধ্যকার জয়ী দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ‘এ’ দল: ২০ ওভারে ১৯৪/৬ (হাবিবুর ৬৫, মেহরব ৪৮*, জিশান ২৬; গুরজাপনীত ২/৩৯)।

ভারত ‘এ’ দল: ২০ ওভারে ১৯৪/৬ (প্রিয়াংশ ৪৪, সূর্যবংশী ৩৮, জিতেশ ৩৩; রাকিবুল ২/৩৯, আবু হায়দার ২/৪৪)।

ফল: বাংলাদেশ সুপার ওভারে জয়ী।