খুলনা | শুক্রবার | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

এভার কেয়ারের সামনে প্রতীক্ষায় প্রহর গুণছে লাখো মানুষ

পারভেজ মোহাম্মদ |
১২:৫৫ এ.এম | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫


স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি ছিলেন জাতির দিশারী ও আলোকবর্তিকা। তার দেশপ্রেম, সততা, সাহস ও দায়িত্বশীলতার মানদন্ডে তিনি ছিলেন অনন্য। জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বরণের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে ফিনিক্স পাখির মত ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তার অধিকারী হয়ে আবির্ভূত হন তাঁর সহধর্মিণী বিএনপি র চেয়ারপারসন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে দেশ ও জাতির জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেজন্য তিনি দেশের ইতিহাসে মহীয়সী নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার দূরদর্শিতা, গণতন্ত্র ও মুক্তির সংগ্রামের অগ্নিমশাল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তাঁর আপোষেহীন নীতি ইতিহাস কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখবে। মাদার অফ ডেমোক্রেসি খ্যাত  বেগম জিয়া সীমাহীন দুঃখ, কষ্ট, জেল, জুলুম সহ্য করে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন বলে আজও এদেশের মানুষ স্বপ্ন  দেখে। ১৮ কোটি মানুষের নির্ঘুমে সেই সোনালী স্বপ্ন রেটিনাতে  আটকে গেছে। বেগম জিয়া গত দু সপ্তাহ শুয়ে আছেন হাসপাতালের যান্ত্রিক বিছানায়। প্রাণান্ত চেষ্টায় ব্রত দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ। সুস্থতার অসীম আকুতিতে প্রতীক্ষায় প্রহর কাটছে গোটা জাতির। দেশনেত্রীর প্রাণ ভিক্ষায় জায়নামাজে বসে কাঁদছেন কোটি মানুষ। ৫৬ হাজার (প্রায়) বর্গমাইলের বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জ নগর-বন্দরের মানুষের দৃষ্টি এভার কেয়ারের দিকে। প্রতিদিন নিত্য নতুন মানুষ ভিড় করছে বসুন্ধরার এই হাসপাতাল গেটে। বেগম খালেদা জিয়ার অভাবনীয় নিখাঁদ নিকষিত দেশপ্রেম, অসামান্য আভিজাত্য ও  আপোষহীন ধনুভঙ্গ ভাবমূর্তি তাকে জনপ্রিয়তার শিখরে তুলে এনেছে, এ যেন তারই প্রতিচ্ছবি। একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান থেকে তিনি হয়ে উঠেছেন দেশনেত্রী। দখল করেছেন জাতীয় অভিভাবকত্বের স্থান। দমন নিপীড়ন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আর ক্ষমতা যে, ভালোবাসা আর বিশ্বাসের কাছে টিকতে পারে না বেগম খালেদা জিয়া সেই শ্রদ্ধার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ এক মহীয়সী নারী। গোটা বাংলাদেশ সকল বিরোধ ভুলে, দলীয় মতপার্থক্যকে বিসর্জন দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় উচ্চারিত হচ্ছে বিনম্র প্রার্থনা। এই প্রার্থনা একটি জাতির হৃদয় থেকে জন্ম নেয়া সম্মান, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার নির্মল আকুতি। আজ কোটি কোটি মানুষের চোখে যে অশ্র“, হৃদয়ে যে উদ্বেগ এবং তাঁর সুশ্রূষা কামনায় সব ধর্মমতের মানুষের যে প্রার্থনা, তা প্রমাণ করে বেগম জিয়ার প্রতি মানুষের ভালোবাসা অনন্ত। খালেদা জিয়া বেঁচে আছেন, থাকবেনও। তিনি উত্তরাধিকার যৌক্তিকভাবেই সাব্যস্ত করেছেন। প্রিয় সন্তান তারেক রহমানকে তিনি রাষ্ট্র রাজনীতির পরিমন্ডলে জুতসই করে উপস্থাপন করেছেন। আগামী বাংলাদেশের কান্ডারী তারেক রহমান। যিনি তার পিতা ও মায়ের সংগ্রামী জীবন এবং জীবনাদর্শের প্রত্যক্ষ সাক্ষী।  তাকে ঘিরে সরব এখন বাংলাদেশের রাজনীতি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মমতাময়ী মা। তার দেশে ফেরা নিয়ে নানা প্রশ্ন মানুষের। সত্যটা অনেক গভীর। এর ভিতরে আছে মায়ের জন্য সন্তানের হৃদয় ভাঙ্গা অপেক্ষা, আছে নিরাপত্তার অজানা শঙ্কা আর আছে ইতিহাসের নির্মমতা। মায়ের অসুস্থতার প্রতিটি মুহূর্ত তার জন্য অসহনীয়  কষ্টের। একজন সন্তানের কাছে এর চেয়ে বড় ট্রাজেডি কি হতে পারে? এই মুহূর্তে তার জীবনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব, মাকে বাঁচানো এবং তার সবচেয়ে বড় প্রতিশ্র“তি দেশে ফিরে জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারে পাশে এসে দাঁড়ানো। আর সেই কাজটি তিনি অবশ্যই বাস্তবায়ন করবেন। অচিরেই দেশে ফিরবেন তিনি। তবে একজন দায়িত্ববান নেতা হিসেবে আবেগের  ঊর্ধ্বে থেকে, নিরাপদ ও শক্ত অবস্থান থেকে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার পূর্ণ প্রতিশ্র“তি নিয়ে আসতে হবে। এভার কেয়ারে শুয়ে থাকা মানুষটির ওপর দেশের মানুষের শ্রদ্ধার প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে তাকে আসতেই হবে। কোটি মানুষের দোয়া আর সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে শতভাগ। রাতের আঁধার কাটিয়ে কোন এক সোনালী ভোরে সন্তান ফিরবে মায়ের কোলে। বীরের বেশে দেশের মাটিতে পা রাখবে আগামীর বাংলাদেশ। সেই  মহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হয়ে থাকবে প্রতিক্ষণে দেশনেত্রীর সুস্থতার অসীম আকুতিতে প্রতীক্ষায় প্রহর কাটানো বসুন্ধরা এভার কেয়ারের সামনের একখণ্ড বাংলাদেশ।