খুলনা | শনিবার | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

খুলনায় পেঁয়াজের দাম বাড়লো আরেক দফা কমেনি ভোজ্য সয়াবিন তেল ও চালের মূল্য

আল মাহমুদ প্রিন্স |
০১:৪৭ এ.এম | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫


খুলনায় সবজির বাজার কিছুটা স্বাভাবিক হলেও স্থিতিশীল রয়েছে ভোজ্য সয়াবিন ও চালের দাম। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়লো আরেক দফা। পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি বেড়েছে অন্তত ত্রিশ টাকা। খুচরা বাজারে একশ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে একশ’ চলি­শ টাকা। চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী তাদের ইচ্ছামত পণ্যমূল্য বাড়িয়ে কৌশলে পকেট কাটছেন ভোক্তাদের। দাম নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিপাকে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। এছাড়া অপরবির্তিত রয়েছে ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও মাংসের বাজার। এসব পণ্য ও জিনিসের সরবরাহ থাকলেও অধিক লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও কারসাজির কারণে দাম কমছে না। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভেজাল বিরোধী অভিযান ঝিমিয়ে যাওয়ায় এসব পণ্য ও জিনিসের দাম ক্রেতাদের নাগালো আসছে না।  
গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপরবির্তিত রয়েছে ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও মাংসের বাজার। এখনো স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে ভোজ্য সয়াবিন তেলের দাম। বোতলজাত ভোজ্য সয়াবিন ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা পাঁচ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৯২০ টাকা দরে। অর্থাৎ, প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৪ টাকা। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই কষ্টের। তবে যাদের বোতলজাত সয়াবিন আগে আনা রয়েছে তারা বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করছে ৯৩০ থেকে ৯৪০ টাকা দরে। অথচ চার সপ্তাহ আগে লিটারপ্রতি যা বিক্রি হয়েছে ১৮৩ টাকা দরে। বোতলজাত সয়াবিনের চেয়ে লুজ সয়াবিনের দাম অনেক অনেক বেশি। লুজ সয়াবিন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। প্রায় তিনমাস আগেও লুজ সয়াবিন কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। 
তবে সবজির দাম কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। নগরীর ময়লাপোতাস্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৬০ টাকা, মানভেদে রসুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কুশি ৪০ টাকা, কাঁকরল ৫০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, নতুন আলু ৫০ টাকা, কাঁচকলা প্রতিহালি ৪০ টাকা, শীতকালীন সিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
এদিকে আরেক দফা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। কমেনি মশুর ডালের দাম। প্রতিকেজি মশুর ডাল (মোটা) ১০০ টাকা, মশুর ডাল (সরু) ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দেড় মাস আগে প্রতিকেজি মোটা মশুর ডাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মশুর ডাল (সরু) ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
কমছে না চালের দাম। চালের বাজার রয়েছে অপরিবর্তিত। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি স্বর্ণা চাল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, আঠাশ বালাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৫ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬০ থেকে ৬৬ টাকা ও বাসমতি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ দুই মাস আগে স্বর্ণা চাল ৫২ টাকা, আঠাশ বালাম ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭০ থেকে ৭২ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং বাসমতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংসের বাজার রয়েছে আকাশ ছোঁয়া। দরিদ্র পরিবারের গরুর মাংস খাওয়া খুবই কষ্টকর। কমেছে লেয়ার মুরগির ডিমের দাম। প্রতিহালি লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। বছরের পর বছর গরুর মাংস বিক্রি হয়ে আসছে চড়া দামে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের পক্ষে কেনা কষ্টকর। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। কোথাও কোথাও আবার গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬শ’ টাকা কেজি দরে।  
নগরীর এ্যাপ্রোচ রোডস্থ রূপসা কেসিসি মার্কেট, নতুন বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, দোলখোলা বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে একই দামে বিক্রি হয়েছে এসব জিনিস পণ্যসামগ্রী। নগরীর কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে আসা জহুরুল ইসলাম বলেন, সবজির দাম কিছুটা কমলেও কমেনি অন্যান্য জিনিসের দাম। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে আরেক দফা। নগরীর রূপসা কেসিসি মার্কেটে আসেন সুমন আহম্মেদ বলেন, সবজির দাম কমলেও কমেনি সয়াবিন তেলসহ অন্যান্য জিনিসের দাম। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি দোকানে পণ্যমূল্য তালিকা টানিয়ে দিলে দাম বেশি নিতে পারবে না। নগরীর ময়লাপোতাস্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজারের শফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত সবজির আমদানি রয়েছে। এজন্য দাম কমতে শুরু করেছে। নগরীর রূপসা কেসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ী ডালিম বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়তি।