খুলনা | সোমবার | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

একটি দলের কর্মকান্ড একাত্তরে দেখেছে দেশবাসী

অরাজকতা-দুর্নীতি রুখতে পারে জনগণই : তারেক রহমান

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৮ এ.এম | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫


বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে অরাজকতা ও দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করেছে উলে­খ করে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে একমাত্র জনগণ এবং গণতন্ত্র। 
রোববার বিকেলে ‘বিএনপি’র দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশে আয়োজিত অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার লাগাম টেনে ধরা এখন সময়ের দাবি। এই দুই সংকট কাটানো না গেলে নারী, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে যেকোনো পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার সক্ষমতা বিএনপি’রই আছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্বৈরশাসকের মতো কিছু মানুষ বিএনপিকে সমালোচনা করছে। অথচ বিএনপি সরকারের আমলে তাদের দুইজন মন্ত্রী ছিলেন। শেষদিন পর্যন্ত তারা মন্ত্রিসভায় থেকে প্রমাণ করেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার অবস্থান ছিল স্পষ্ট। “বিএনপি’র বিরুদ্ধে ওঠা কোনো অভিযোগই আদালতে প্রমাণিত হয়নি” বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে, ৯০-এর স্বৈরাচার আন্দোলনের পরে, বিভিন্ন সংকটের সময়ে যখন বিএনপিকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তখন বিএনপি অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে, অবস্থার উন্নতি করেছে। এই মুহূর্তে আমরা আগামী দুই মাস পরে একটি নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। গত ১৬ বছরে যে স্বৈরাচারকে জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করেছে, সেই স্বৈরাচার দেশের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রকে কীভাবে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে-তা আমরা জীবনের পরতে পরতে অনুভব করতে পারি।
তিনি বলেন, জনগণই আমাদের সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। তাহলে কেন আমরা জনগণের সামনে দাঁড়াব না? আমাদের লক্ষ্য দেশ ও জনগণকে নিয়ে। জনগণ যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মাথা পেতে নেব। আড়াই থেকে তিন বছর আগে, যখন স্বৈরাচার শক্ত হাতে মানুষের বাক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকারের গলা টিপে রেখেছিল-সেই রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আমরা মানুষের সামনে ‘সংস্কার প্রস্তাব’ দিয়েছিলাম। যা ৩১ দফা হিসেবে পরিচিত।
জাতীয় সরকার গঠন প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার পতনের দিন মহাসচিব মির্জা ফখরুল জানতে চেয়েছিলেন জাতীয় সরকার করা হবে কি না। “আমরা বলেছিলাম আমরা জনগণের কাছে যাবো। কারণ জনগণই আমাদের শক্তির উৎস।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনায় তিনি বলেন, যারা বলে আমাদের দেখেননি, এবার দেখুন তাদেরকে মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। কীভাবে তারা হত্যা, লুণ্ঠন আর নির্যাতন চালিয়েছে, তা জাতি ভুলে যায়নি।
রাজনীতির ময়দানে স্বর্গ-নরক নির্ধারণের ভাষা ব্যবহারকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বেহেশত-দোজখ দেওয়ার মালিক একমাত্র আল­াহ। এগুলো যারা বলে তারা শিরক করছে।
বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, মানুষের জন্য আমরা যা করতে পারি তা কমিট করব। যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা কেউ কমিট করতে পারে না। মুসলমান হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি-পৃথিবীর সবকিছুর মালিক আল­াহ তাআলা। কিছু কিছু মানুষ বিভিন্ন জিনিসের টিকিট বিক্রি করছে।
নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তারেক রহমান বলেন, আমি গত প্রায় এক বছরের বেশি সময় থেকে বলে আসছি আমাদের সামনের সময়গুলো কিন্তু খুব ভালো নয়, সামনে অনেক কঠিন সময় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে এই দেশের জনগণ এবং এই ষড়যন্ত্র জনগণকে সাথে নিয়ে রুখে দিতে পারে বিএনপি।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজকে আমরা দেশ গড়ার পরিকল্পনা করছি। এই কাজটি যদি আমাদের সফল করতে হয়, দেশকে যদি সামনে নিয়ে যেতে হয়, মানুষকে যদি তার অবস্থান পরিবর্তন করে ভালো অবস্থানে নিতে হয়, তাহলে আমাদের সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।