খুলনা | রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর

খবর প্রতিবেদন |
১০:০৫ পি.এম | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

 

অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন। তার এই আগমনকে অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে করতে চাচ্ছে দলটি। এজন্য নানা রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি কিছুই করবে না, মানুষই আসবে। 
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপি’র চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে এসে পৌঁছাবেন। দলের পক্ষ থেকে তাঁকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
এর আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটা স্বস্তির বার্তা নিয়ে আসবে। আমি আপনাদের অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, আমাদের কোটি কোটি মানুষের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, যিনি প্রায় দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে নির্বাসিত অবস্থায় বিদেশে রয়েছেন এবং বিগত প্রায় একযুগ ধরে তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আমাদের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আমাদের গণতন্ত্র উত্তরণের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের সফলের দারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন, আমাদের সেই সংগ্রামে নেতা, এদেশের গণমানুষের অত্যন্ত প্রিয় মানুষ তারেক রহমান, তিনি আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে আমাদের মাঝে এসে পৌঁছাবেন। 
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে এবং সবার পক্ষ থেকে আমরা তার এই আগমনকে শুধু স্বাগত নয়, আমরা আনন্দের সঙ্গে সমগ্র জাতিকে জানাতে চেয়েছি। গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যে সমস্ত বাধাগুলো সৃষ্টি হয়েছিল, আমরা মনে করি-আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে এসে পৌঁছালে সেসমস্ত বাধা দূর হয়ে যাবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, লন্ডনে যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং বর্তমান অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, ফেব্র“য়ারি মাসের মধ্যবর্তী সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের যতটুকু একটা শঙ্কা ছিল, সেটা চলে গিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্যদিয়ে নির্বাচনের যে রেল চলতে শুরু করেছে, সারাদেশের মানুষের মধ্যে যে আশা-প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে-সেটা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আগমন অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হতে পারে, সেই বিষয়ে  আপনারা (সাংবাদিক) আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে উনি ২৫ তারিখে এসে ঢাকায় পৌঁছাবেন, ইনশাআল­াহ।  
তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এর পর থেকে তিনি সে দেশেই আছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তারেক রহমানের সাজার রায় বাতিল এবং কোনো কোনো মামলায় আইনি প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি পান। এর পর থেকে তাঁর দেশে ফেরার আলোচনা শুরু হয়। তারেক রহমান শিগগিরই ফিরবেন,এমন কথা বিএনপি নেতারা কয়েক মাস ধরেই বলে আসছেন। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ বলেননি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠলে ধারণা করা হচ্ছিল তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরছেন। এই প্রেক্ষাপটে লন্ডন থেকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাক্সক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’
ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেছিলেন, ‘স্পর্শকাতর বিষয়টির বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত। রাজনৈতিক বাস্তবতার এ পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে উপনীত হওয়ামাত্রই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমার সুদীর্ঘ উদ্বিগ্ন প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে বলেই আমাদের পরিবার আশাবাদী।’
এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বারবার বলা হয়েছে, তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই।