খুলনা | সোমবার | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১ পৌষ ১৪৩২

বাংলাদেশি শান্তিকর্মীদের ওপর হামলা, সুদানকে সতর্কবার্তা জাতিসংঘের

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫১ পি.এম | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫


সুদানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হওয়ার ঘটানার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সেই সঙ্গে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, এ ধরনের তৎপরতা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, “সুদানের কাদুগ্লিতে জাতিসংঘের ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলার জেরে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ওপর এ ধরনের হামলা পুরোপুরি অন্যায্য এবং এ ধরনের ঘটনা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতে পারে।

“আমি সবাইকে জাতিসংঘের কর্মী এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য তাদের বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। জবাবদিহিতা থাকা দরকার।”

এক্সবার্তায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের প্রতিও সহানুভূতি জানিয়েছেন গুতেরেস।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসও এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে ‘বৈশ্বিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

শনিবার সুদানের আবেই জেলার কাদুগ্লিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টের ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। এরা হলেন কর্পোরাল মোঃ মাসুদ রানা, সৈনিক মোঃ মমিনুল ইসলাম, সৈনিক শামীম রেজা, সৈনিক শান্ত মণ্ডল, মেস ওয়েটার জাহাঙ্গীর আলম এবং লন্ড্রি কর্মচারী মোঃ সবুজ মিয়া।

গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সুদানের সেনা-সরকার এ নিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে এ হামলা চালানোর জন্য সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)-কে দায়ি করা হয়েছে। দেশটির সেনা ও সরকারপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান শান্তিরক্ষীদের ওপর এ হামলাকে ‘বিপজ্জজনক উত্তেজনা বৃদ্ধি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিবৃতিতে।

তবে এখন পর্যন্ত আরএসএফ এ ঘটনায় কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

২০২৩ সালের এপ্রিলে উত্তরপূর্ব আফ্রিকার সোনা ও জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ দেশ সুদানে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ। সেই সংঘাত এখনও চলছে এবং গত আড়াই বছরে সুদানের রাজধানী খার্তুম, দারফুর প্রদেশসহ দেশজুড়ে নিহত হয়েছেন হাজার হাজার সুদানি নাগরিক এবং বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন আরও কয়েক লাখ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শিগগিরই এই সংঘাত থামার কোনো লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি