খুলনা | সোমবার | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১ পৌষ ১৪৩২

অং সান সু চি মারা গেছেন, আশঙ্কা ছেলের

খবর প্রতিবেদন |
০৬:২০ পি.এম | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

 

মিয়ানমারের কারাবন্দী ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চি ইতোমধ্যেই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করছেন তার কনিষ্ঠ পুত্র কিম অ্যারিস।

২০২১ অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক জনপ্রিয় সু চিকে আড়ালে রাখা হয়েছে। গত বছর আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে তোলা ছবিতে দেখা গেছে তাকে এবং দীর্ঘদিন ধরে দেশটির জান্তা সরকারের সুচির স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনো সংবাদ দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

কিম অ্যারিস রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি তার ৮০ বছর বয়সী মায়ের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে ২০২১ সালে আটকের পর থেকে সুচির হৃদপিণ্ড, হাড় এবং মার ড়িসমস্যা সম্পর্কে কিছু তথ্য পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘তার (সুচি) স্বাস্থ্যগত সমস্যা চলছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কেউ তাকে দেখেনি। এমনকি তার আইনি দলের সঙ্গে যোগাযোগের অনুমতিও দেওয়া হয়নি, তার পরিবারের কথা তো দূরের কথা। আমি যতদূর জানি, তিনি ইতিমধ্যেই মারা যেতে পারেন।’

সুচিপুত্র আরও বলেন, ‘আমি মনে করি মিন অং হ্লাইংয়ের (মিয়ানমার জান্তা নেতা) আমার মায়ের ক্ষেত্রে নিজস্ব এজেন্ডা আছে। যদি তিনি নির্বাচনের আগে বা পরে তাকে মুক্তি দিয়ে অথবা গৃহবন্দী করে সাধারণ জনগণকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাকে ব্যবহার করতে চান, তাহলে অন্তত সেটাই হবে।’

অ্যারিস বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন নোবেলজয়ী এই নেত্রীকে রাজধানী নেপিদোতে আটকে রাখা হয়েছে এবং দুই বছর আগে তার কাছ থেকে পাওয়া শেষ চিঠিতে তিনি গ্রীষ্ম এবং শীতের মাসগুলোতে তার কক্ষের চরম তাপমাত্রা সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন।

বিশ্বজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ মিয়ানমারের কথা ভুলে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যেহেতু সামরিক বাহিনী আসন্ন নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে, যা আমরা সকলেই জানি সম্পূর্ণ অন্যায্য, তাই আমার এই ছোট সুযোগটি ব্যবহার করা উচিত। জাপানের মতো বিদেশী সরকার জান্তার ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করতে পারে এবং তার মায়ের মুক্তির আহ্বান জানাতে পারে।

মিয়ানমারের জান্তার একজন মুখপাত্র মন্তব্য এ বিষয়ে জানতে ফোন করলেও সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জিতেছিল সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি। তবে ওই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির সরকারকে উৎখাত করা হয় এবং এরপর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাকে আটক করে রেখেছে। নির্বাচনী জালিয়াতি, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ঘুষ থেকে শুরু করে টেলিকমিউনিকেশন আইন লঙ্ঘন পর্যন্ত অপরাধের দায়ে নোবেলজয়ী এই নেত্রীকে ২৭ বছরের কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হয়েছে। যদিও তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগই অস্বীকার করেছেন অং সান সু চি। 
সূত্র: রয়টার্স