খুলনা | শনিবার | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৬ পৌষ ১৪৩২

একজনকে পিটিয়ে পুলিশে দিলো বিক্ষুব্ধরা

ঝিনাইদহে ৪ আ’লীগ নেতার বাড়ি, দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি |
০১:৩৪ এ.এম | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদীর মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাত্র-জনতার মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে ঝিনাইদহ শহর। মুর্হুমুহু মিছিল ও স্লোগানে ঘুমন্ত শহর মুহূর্তের মধ্যেই যেন জেগে ওঠে। মিছিলকারীরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও খুনি হাসিনার দোসরদের প্রতিরোধ করার হুসিয়ারী দিয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের চার নেতার বাড়ি, দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর আরাপপুরের বাসভবন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কনক কাান্তি দাসের হামদহ এলাকার বাসভবন ও সদর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মাসুমের আদর্শ পাড়ার বাড়িতে ক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা ভাঙচুর করে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা কনক কান্তি দাসের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
কনক কান্তি দাসের ছোট ভাই স্কুল শিক্ষক গোপাল কৃষ্ণ দাস জানান বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে বিক্ষুব্ধ শতাধিক লোকজন। এক পর্যায়ে তারা গেট ভেঙ্গে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা আসবাবপত্র বের করে বাড়ির সামনে অগ্নিসংযোগ করে। অবস্থা বেগতিক দেখে গোপাল কৃষ্ণ দাস স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে যান। 
এছাড়াও শুক্রবার বেলা আড়াইটার সময় ঝিনাইদহ পৌরসভার মেইন গেটের সামনে জেলা যুবলীগের আহবায়ক আশফাক মাহমুদ জন-এর বন্ড শোরুম নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সজিব আহমেদ (৩০) নামে এক যুবককে বেধড়ক কিল-ঘুষি ও মারধর করে বিক্ষুব্ধরা। মারধরের শিকার সজিব আহমেদ ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজলের ইটভাটার সহকারি ম্যানেজার ও অনুসারী বলে জানা গেছে। মারধরের পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা। ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর কনক কান্তি দাস সপরিবারে আত্মগোপনে চলে যান। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে তিনি বর্তমানে সপরিবারে ভারতে অবস্থান করছেন। এদিকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সেনা টহল জোরদার ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল¬াল হোসেন জানান শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষুব্ধ জনতা মধ্যরাতে মিছিল বের করে। পুলিশ তাদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।