খুলনা | বুধবার | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৯ পৌষ ১৪৩২

দিল্লিতে ১৫ হাজার ‘শক্তিশালী’ পুলিশ মোতায়েন

দিল্লি­ ও কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হিন্দুত্ববাদীদের, দফায় দফায় সংঘর্ষ

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৯ এ.এম | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫


ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি­সহ কয়েকটি এলাকার পাশাপাশি এবার কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেছে উগ্র হিন্দুত্বাবাদীরা। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে চাইলে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। মঙ্গলবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এবিভিপি ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চসহ সংঘ পরিবারের একাধিক সংগঠনের ডাকে বিক্ষোভকারীরা কলকাতার বেকবাগান এলাকায় জড়ো হন। মিছিল নিয়ে তারা বাংলাদেশ উপদূতাবাসের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়। 
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ জানাতে এই কর্মসূচি পালন করছেন।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বাংলাদেশ উপদূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিতে চান। তবে পুলিশ বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং বেশ কয়েকজনকে টেনেহিঁচড়ে প্রিজনভ্যানে তৃলে নেয়। খবর পেয়ে উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘœ ঘোষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা জানিয়ে বলেন, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পাশে দাঁড়াতেই তারা সেখানে গেছেন।
বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ বারবার ঘোষণা দেয়, বাংলাদেশ উপদূতাবাসের বাইরে জমায়েত বেআইনি। ব্যারিকেড থেকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও বিক্ষোভকারীরা অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এর ফলে পার্ক সার্কাস এলাকার একাংশে তীব্র যানজট দেখা দেয়। উপদূতাবাস থেকে পার্ক সার্কাস মোড়ের দিকে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
কলকাতার পাশাপাশি দিলি­তেও ভিএইচপি ও বজরং দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশের হাইকমিশনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে দিল্লি­তে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। হাইকমিশনের চারপাশে অতিরিক্ত ব্যারিকেড বসানো হয় এবং মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাইকমিশনের বাইরেও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
দিল্লি­তে ১৫ হাজার ‘শক্তিশালী’ পুলিশ মোতায়েন : ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে স¤প্রতি ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস নামে একজন পোশাক শ্রমিককে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের নয়াদিলি­তে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে বিক্ষোভ করে হিন্দুত্বাবাদীরা। তাদের বিক্ষোভ সামনে রেখে হাইকমিশনের নিরাপত্তা বাড়িয়েছিল পুলিশ ও প্রশাসন। তবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে হাইকমিশনে ঢোকার চেষ্টা করেছিল দল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরঙ্গি দল। এ সময় তাদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবারের  বিশাল এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ১৫ হাজার পুলিশ সদস্যের ‘শক্তিশালী ফোর্স’ মোতায়েন করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে বিক্ষোভকারীদের আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভকারীদের হাইকমিশনে প্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য সরকারি বেশ কিছু বাস ‘বাধা হিসেবে’ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
এর আগে এনডিটিভি জানায়, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ চলছে।  এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দিলি­ পুলিশ হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করলেও, বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ব্যারিকেড ভেঙে কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে। 
প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভকারীরা কমপক্ষে দু’টি স্তরের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড ধরে দূতাবাসে স্লোগান দিতেও দেখা গেছে।
এনডিটিভি জানায়, বিক্ষোভের খবরে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভবনের বাইরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, এলাকাটি তিন স্তরের ব্যারিকেডিং দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে। এছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলায় সেখানকার পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত রয়েছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
হাইকমিশনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সেখানে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি আনা হয় প্যারামিলিটারি বাহিনীর সদস্যদের।