খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১১ পৌষ ১৪৩২

বেতনা নদী খননের মাটি লুটপাটে পুলিশের বাধা

ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে আটক ট্রলি চালককে ছিনতাই, দুই পুলিশ আহত, থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০২:১৮ এ.এম | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫


সাতক্ষীরায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে বেতনা নদীর খননকৃত মাটি লুটপাটকারী ট্রলি চালক সরদারকে ছিনিয়ে নিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী। হামলায় বাধা দেওয়ায় দুই পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। বুধবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপর পুলিশ ফাঁড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।আহত পুলিশ সদস্যদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরা হলেন, ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপ-পরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও সিপাহী মেহেদী হাসান।
ফাঁড়ির কর্তব্যরত উপ-পরিদর্শক সোহরাব হোসেন জানান বেতনা নদীর খননকৃত মাটি নেহালপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট করে আসছিলো একটি মহল। এ চক্রের সর্দার ছিলো ধুলিহর সানাপাড়ার মৃত ইমান আলীর ছেলে ট্রলি চালক কিসমত আলী।
স¤প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহরের এক ঠিকাদার নেহালপুর এলাকার বেতনা নদীর খননকৃত মাটি কিনেছেন মর্মে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অর্ণব দত্ত তাকে মঙ্গলবার অবহিত করেন। একইসাথে ওই মাটি যাতে কেউ লুটপাট না করে তা দেখার জন্য তাকে নির্দেশনা দেন। তাৎক্ষণিক তিনি মঙ্গলবার ট্রলি চালকদের সর্দার ধুলিহর সানাপাড়ার কেসমত আলীসহ সকলকে অবহিত করেন।
সোহরাব হোসেন আরো জানান বুধবার ভোরে কেসমত আলীর নেতৃত্বে ৭/৮ জন নেহালপুর স্লুইস গেটের পাশে বেতনা খননের স্তূপকৃত মাটি কেটে ট্রলিতে ভরে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে মর্মে তিনি খবর পান। বিষয়টি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানান। একপর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারি রাজকুমার মন্ডল বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে মাটি কাটতে বাধা দেন। এ সময় তার উপর চড়াও হয় কেসমত ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে তিনি ট্রলি ভর্তি মাটিসহ কেসমতকে ধরে ফাঁড়িতে আটকে রাখেন।
ফাঁড়িতে আটকে রেখে মারপিট করা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে দিলে কেসমতের ভাই রহমত, স্ত্রী শাহানারা ও ভাইপো বাবুরালীসহ ৩০/৩৫ জন গ্রামবাসী ফাঁড়ির ফটক জোরপূর্বক খুলে ফেলে ভিতরে ঢুকে তারা কেসমতকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সহকারি উপ-পরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও সিপাহী মেহেদী হাসান এতে বাধা দেন। হামলাকারিরা এসময় ওই দুই পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে জখম করে কেসমতকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। 
স্থানীয় সাহেব আলী, নূর হোসেনসহ কয়েকজন জানান বিগত সময়ে বেতনা নদীর খননকৃত মাটি কেসমতের নেতৃত্বে লুটপাট করা হতো। কেসমতের পিছনে থাকা রাঘব বোয়ালরা নেপথ্যে থেকে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার মদদ দিয়েছে।
তবে কেসমত হোসেন দাবি করে বলেন পুলিশের নিষেধ অমান্য করে তিনি বুধবার সকালে বেতনার মাটি কাটছিলেন এটা সত্য। কিন্তু তাকে ধরে আনার পর আর কখনো মাটি কাটবেন না বলার পরও ফাঁড়ির কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সোহরাব হোসেন তাকে মারপিট করেছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাসুদুর রহমান জানান ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় কেসমতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বুধবার বিকেলে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।