খুলনা | শুক্রবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১২ পৌষ ১৪৩২

পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামিসহ ৩ গ্রেফতার, রিমান্ড শুনানী রোববার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০২:১৮ এ.এম | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫


সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া ও দুই পুলিশ সদস্যকে জখম করার ঘটনায় ট্রলি চালকদের এক সরদারসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলেন সদর উপজেলার ধুলিহর সানাপাড়া গ্রামের কিসমত আলী (৪৩), আশিকুজ্জামান (২৫) ও ইমদাদুল ইসলাম (২৭)। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নেহালপুর ও আশপাশের এলাকায় বেতনা নদীর মাটি অবৈধভাবে কেটে ট্রলিতে করে সরিয়ে নিচ্ছিল একটি চক্র। এ চক্রের নেতৃত্বে ছিলেন সদর উপজেলার ধুলিহর সানাপাড়া এলাকার কিসমত আলী। স¤প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহরের এক ঠিকাদার বেতনা নদীর মাটি বৈধভাবে কেনেন। বিষয়টি মঙ্গলবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অর্ণব দত্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানান এবং মাটি যাতে কেউ লুটপাট না করে, সে বিষয়ে বহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেনকে নির্দেশনা দেন। ওই নির্দেশনার পর পুলিশ ফাঁড়ির পক্ষ থেকেও ট্রলি চালকদের সতর্ক করা হয়।
বুধবার ভোরে কিসমত আলীর নেতৃত্বে সাত-আট জন ব্যক্তি নেহালপুর স্লুইসগেট এলাকায় খনন করা মাটির স্তূপ ট্রলিতে করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পারেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় কার্যসহকারী রাজকুমার মণ্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি কাটতে বাধা দিলে কিসমত আলী ও তার সহযোগীরা তার ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে ট্রলিভর্তি মাটিসহ কিসমত আলীকে আটক করে ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে কিসমত আলীর ভাই রহমত আলী, ভাতিজা বাবুর আলীসহ ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালান। তারা ফাঁড়ির ফটক ভেঙে কিসমতকে ছাড়িয়ে নেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে এএসআই মাহাবুর রহমান ও সিপাহি মেহেদী হাসানকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) সাতক্ষীরার উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বাদী হয়ে আট জনের নাম উলে­খসহ অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী রবিবার দিন ধার্য করেছেন। বাকি অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। হামলায় আহত দুই পুলিশ সদস্যের চিকিৎসা চলছে।’