খুলনা | রবিবার | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৪ পৌষ ১৪৩২

হাদি হত্যা: হামলাকারীর ২ সহযোগী ভারতে আটক

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৮ পি.এম | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সহায়তাকারী দুইজন ভারতের মেঘালয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ওসমান হাদি হত্যায় জড়িত প্রধান সন্দেভাজন মূল আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখকে ভারতে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে মেঘালয় পুলিশ ভারতের দুই নাগরিক পুর্তি ও সামীকে গ্রেফতার করেছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসীর গুলিতে মারাত্মক আহত হন ওসমান হাদি। রিকশায় থাকা অবস্থায় তার মাথায় গুলি লাগে। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলে সেখানে ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে মৃত্যু হয় তার।

এ ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার পর প্রধান আসামি শ্যুটার ফয়সালের বাবা মাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মূল অভিযুক্ত ফয়সালসহ তার সহযাগীকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ। তারা ভারতে চলে গেছেন ধারণা করা হচ্ছিল। অবশেষে আজ পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করা হয়।

হাদির হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পর ফয়সাল ও আলমগীর শেখ ঢাকা থেকে সিএনজিতে করে আমিনবাজারে যান। সেখান থেকে গাড়িতে করে কালামপুরে যান। কালামপুর থেকে আরেকটি গাড়িতে করে ময়মনসিংহ সীমান্তে যান। সেখানে ফয়সাল ও আলমগীরকে গ্রহণ করে ফিলিপ স্নাল ও সঞ্জয়। তারা সীমান্তে অবৈধভাবে মানুষ পারাপার করেন। পরে ফিলিপ দুজনকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে নিয়ে যান।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, ফিলিপ ফয়সাল ও আলমগীরকে ভারতের তুরা নামক স্থানে নিয়ে যান। সেখানে ভারতীয় নাগরিক পুর্তির কাছে দুজনকে পৌঁছে দেন। পরে সামী নামের এক ব্যক্তির গাড়িতে করে সেখান থেকে পালিয়ে যান তারা।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, হাদি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া চারজন সাক্ষীও আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, হাদি হত্যা মামলাটি তদন্ত একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এর আগে ওসমান বিন হাদি হত্যার মূলে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেকের নাম-ঠিকানা উন্মোচন করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি একটি রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড। এর পেছনে অনেকে জড়িত থাকার কথা। আমরা এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছি। হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা জড়িত তা উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছি। হত্যাকাণ্ডের পেছনে-মূলে যারা রয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের নাম-ঠিকানা উন্মোচিত করে দেব।