খুলনা | বুধবার | ০৯ জুলাই ২০২৫ | ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

এক মাসেও খোঁজ মেলেনি করোনার আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎকারীর

ল্যাব টেকনোলজিস্ট প্রকাশের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই দুদক ও বিভাগীয় মামলার সম্ভাবনা

বশির হোসেন |
১২:৪২ এ.এম | ০২ নভেম্বর ২০২১


খুলনায় করোনা পরীক্ষার ফি বাবদ আদায় করা আড়াই কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাশের খোঁজ মেলেনি এক মাসেও। এরই মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত চলমান রয়েছে। চলতি সপ্তাহে দুদক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আলাদা দু’টি মামলার হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, মামলা হলেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রকাশকে খুঁজে বের করতে তৎপর হবে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা হয় খুলনা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানকার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাশ ছিলেন নমুনা পরীক্ষার ফি গ্রহনের দায়িত্বে। ২০২০ সালের ২ জুলাই থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতেন, তিনি খাতায় লিপিবদ্ধ করতেন কম সংখ্যক মানুষের নাম। বাকি টাকা প্রকাশ আত্মসাৎ করতেন। প্রকাশ যে পরিমাণ টাকা ক্যাশিয়ারের কাছে দিতেন সেই টাকা বুঝে নিয়ে ব্যাংকে জমা দেয়া হতো। এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সন্দেহ হলে প্রকাশের কাছে চিঠি দিয়ে এ বছরের এপ্রিল মাসে লিখিত হিসাব চাওয়া হয়। তখন বিভিন্ন তালবাহানা করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন প্রকাশ। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে হিসেবে গড়মিল রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি কমিটির কাছে হিসাব না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে প্রকাশ কুমারের আর কোনো খোঁজ নেই।
প্রকাশের স্ত্রী মাধবী লতা জানান, স্বামীর কোনো খোঁজ তার কাছে নেই। প্রকাশ তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি বলেও দাবি করেন তিনি।
খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডাঃ জসিম উদ্দিন হাওলাদার জানান, প্রকাশ এক মাস সাত দিন ধরে আত্মগোপনে আছেন। তদন্ত কমিটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১৮ অক্টোবর থেকে ১৫ দিনের সময় চেয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। প্রকাশ ধরা পড়লেই সবকিছু পরিষ্কার ভাবে হওয়া যেত বলে তিনি জানিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডাঃ মঞ্জুরুল মুর্শিদ জানান, সঠিক তদন্তের জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন। যেন সঠিক তথ্য বের হয়ে আসে। সুষ্ঠু প্রতিবেদন জমা দিতে নভেম্বর মাস সময় লাগতে পারে বলে তিনি উলে­খ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শৃঙ্খলা শাখার দায়িত্বপূর্ণ কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানিয়েছেন চলতি সপ্তাহে প্রকাশ কুমার দাশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে দুদক খুলনা অফিসের উপ-পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান বলেন, ঢাকা থেকে প্রকাশের ব্যাপারে মামলার অনুমোদন মিলেছে শুনেছি। এখন পর্যন্ত কাগজ হাতে পাইনি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনুমোদন কপি হাতে পেলে দুদক মামলার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করবে।