খুলনা | সোমবার | ১৯ মে ২০২৫ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মোংলায় বিয়ে বাড়িতে নাচ-গানের স্থলে কোরআন তেলওয়াতের আয়োজন

মোংলা প্রতিনিধি |
১২:১১ এ.এম | ২০ ডিসেম্বর ২০২১


নাচ-গান আর হৈ-হুল­ার পরিবর্তে এক ভিন্ন আয়োজন করেছেন কনের বাবা। মোংলা উপজেলা চিলা ইউনিয়নে বিবাহের অনুষ্ঠানে কোরআন তেলওয়াতের আয়োজন করে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কনের বাবা আবু সাইদ।
জানা যায়, গতকাল রবিবার সকালে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি ৯নং ওয়ার্ডের আবু সাইদ শেখের বড় মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১৯) এর সাথে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর ফরাজির পুত্র হাফেজ মোঃ রিয়াজের (২৪) বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। উক্ত অনুষ্ঠানে গান বাজনা না বাজিয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৩০ জন এতিম শিশু ছাত্রকে দাওয়াত দিয়ে কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন কনের বাবা আবু সাইদ। এতে এলাকার মানুষেরা মাঝে অন্য রকম অনুভূতি দেখা দিয়েছে। এলাকার মানুষের কাছে প্রসংশায় ভাসছে কনের বাবা। অপসংস্কৃতি বাদ দিয়ে ইসলামি সংস্কৃতি ফিরে আসবে বলে মনে করেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
জয়মনি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ নুরে আলম বলেন, বিয়ে একটি সর্বজন স্বীকৃত সবচেয়ে পবিত্র সামাজিক বন্ধন। ইসলাম এমন একটি জীবন ব্যবস্থা যেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা স্পষ্ট করে বলা আছে। বিয়ের মাধ্যমে দুইজন মানুষের সংসার শুরু হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সমাজে বিয়ে বাড়ি সাধারণত নাচ-গান আর অন্য রকম আয়োজনের মধ্যেই দিনটি অতিবাহিত করা হয়। কিন্তু কনের বাবার পক্ষ থেকে যে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা হলো এটা প্রশংসনীয়। আমরা চাই এই রেওয়াজ যদি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে তবে সমাজের বেহায়াপনা আর থাকবে না।
কনের বাবা বলেন, ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একজন হাফেজ স্বামীর হাতে আমার আদরের মেয়েকে তুলে দিচ্ছি। আর এ জন্যই আমি অন্য কোন আয়োজন না করে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করেছি। আমি বিশ্বাস করি এতে আমার মেয়ের সংসার জীবন অনেক সাচ্ছন্দ ও সুখের হবে ইনশাআল­াহ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল রহমান মলি­ক বলেন, আমার ওয়ার্ডে এমন একটি আয়োজনে আমি আসলেই খুব আনন্দিত। আমার প্রতিবেশী আবু সাইদের এমন আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। ব্যাতিক্রমী এ বিয়ের ব্যাপারে চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন জানান, বিয়ের প্রথম থেকেই আমি সব কিছু জানি। কাবিনের সময়ও আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। মেয়ের বাবা আবু সাইদ একজন নামাজি ও ভালো মনের মানুষ। আর এ জন্যই তার এমন কোরআন খতমের আয়োজন। আর আমি এ আয়োজনে ব্যক্তিগতভাবে খুব খুশী। আমার ইউনিয়নে এর আগে এমন কোন আয়োজন হয়নি। এ ব্যাতিক্রমী আয়োজনের জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই এবং বর-কনের দাম্পত্ত জীবন যেন আল­াহ সুখে-শান্তিতে রাখে এ কামনাই করছি।