খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তালিকা নেয়া হলেও কোন সাড়া মেলেনি

ঝুঁকি নিয়ে পনের মাস ধরে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে পরিশ্রম করছেন খুমেকের ছয় নমুনা সংগ্রহকারী

বশির হোসেন |
১২:৫০ এ.এম | ০৪ জুলাই ২০২১

গেল বছর মার্চে যখন করোনার সংক্রমণ সবে শুরু।  আতঙ্কে সর্বত্র ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থা। তখন নমুনা সংগ্রহের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এগিয়ে এসেছিলেন  মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ল্যাব) পাস করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কয়েকজন। এরপর বিভিন্ন সময় সরকারি চাকুরির আশ্বাস ও বিভিন্ন ভাবে আশান্বিত হলেও এখনও সরকারি কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা ছাড়াই স্বেচ্ছাশ্রমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ ও করোনা রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট। টাকা বলতে গত ১৫ মাসের মধ্যে গত জুন মাসে ৮ হাজার করে জন প্রতি যাতায়াত ভাড়া পেয়েছেন। সপ্তাহে সাত দিনই গড়ে তিন শতাধিক মানুষের নমুনা সংগ্রহ করেন তারা। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে নমুনা সংগ্রহ করেন ছয়জন মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ল্যাব)। এরা প্রত্যেকে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেল টেকনোলি (ল্যাব)-এর বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী। চাকুরি করতেন বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্যাথলজিতে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে দিন-রাত স্বেচ্ছাশ্রমে পরিশ্রম করে যাচ্ছে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের কাজে। বাড়ি বাড়িও গিয়েছেন নমুনা সংগ্রহ করতে। স্বেচ্ছাসেবী এই ছয় নমুনা সংগ্রহকারী টাকা বলতে গত ১৫ মাস ধরে স্বেচ্ছা সেবা দিয়ে যাচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। মধ্যে সর্বশেষ ১৪ মাস বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করার পর গত জুন মাসে ৮ হাজার করে জন প্রতি যাতায়াত ভাড়া পেয়েছেন। সপ্তাহে সাত দিনই গড়ে তিন শতাধিক মানুষের নমুনা সংগ্রহ করেন তারা।
নমুনা সংগ্রহকারী মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট নয়ন রায় বলেন, আমরা ৬ জন নমুনা সংগ্রহ করি। প্রত্যেকেই ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী। করোনার শুরুতে কোন কিছু না ভেবে দেশের প্রয়োজনে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে যাচ্ছি ১৪ মাস পরে গত মাস থেকে ৮ হাজার টাকা যাতায়াত ভাড়া বাবদ পেয়েছি। ডাঃ নেওয়াজ নওশের স্যারের নেতৃত্বে আমরা দিন-রাত করোনার নমুনা সংগ্রহ করে যাচ্ছি।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজিস্ট ডাঃ নেওয়াজ নওশের বলেন, করোনা শুরুতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বেশ কয়েকজন নমুনা সংগ্রহের কাজে এগিয়ে এসেছিলেন। তখন সরকারি চাকুরিজীবী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট-এর সংকট থাকায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের কাজে নেয়া হয়েছিলো। অত্যন্ত দায়িত্বশীলতা এবং দক্ষতার সাথে তারা কাজ করে চলেছে। বিভিন্ন সময় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে তাদের। এর মধ্যে নমুনা সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ আসায় একজনকে বাদ দেয়া হয়েছে অন্য আর একজনের বিরুদ্ধে বাদ দেয়ার সাথে সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করা এসব নমুনা সংগ্রহকারীর তালিকা চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাতায়াত ভাড়া বাবদ মাসিক ৮ হাজার টাকা দেয়া শুরু হয়েছে। সরকার এদের নিয়োগের ব্যবস্থা করলে অথবা সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট যোগদান দিলে আরও ভালোভাবে কাজ করা সম্ভব হতো।