খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৩ জুলাই ২০২৫ | ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

সমাজে নৃশংসতা বাড়ছে, জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে

|
১২:০৯ এ.এম | ১১ মে ২০২২


গত সোমবারের সংবাদমাধ্যম ছিল নানা ধরনের নৃশংস অপরাধের খবরে আকীর্ণ। একে একে স্ত্রী ও দুই কন্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করেছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার আসাদুর রহমান রুবেল (৪০)। এর পর আত্মহত্যার জন্য পার্শ্ববর্তী পাঁচুরিয়া এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শুয়ে পড়েন তিনি। জানতে পেরে স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
একই দিনের সংবাদপত্রে প্রকাশিত আরেকটি খবরে দেখা যাচ্ছে, চার মাসের শিশু ও তার মাকে ঝলসে দেওয়া হয়েছে এসিডে। চট্টগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে খুন। জয়পুরহাটে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হয় কলেজ ছাত্রীকে। চট্টগ্রামে নির্জন পাহাড়ে বাকপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এগুলো শুধু প্রকাশিত একদিনের সংবাদ। সংবাদপত্র ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমেও এ ধরণের অপরাধের খবর প্রকাশিত হয়েছে প্রতিদিন।
দেখা যাচ্ছে- হত্যা, ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার খবরগুলোই মূলত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে অনেক ধরণের অপরাধ প্রতিনিয়ত সংঘটিত হচ্ছে। এগুলোর খবর অপ্রকাশিত থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের দেশে অপরাধবৃত্তি এতটাই বেড়ে গেছে যে, খুন-ধর্ষণের ঘটনা না ঘটলে সেগুলো যেন খবর বলে গণ্য হচ্ছে না। অপরাধ বৃদ্ধির এই ধারা ভয়াবহ উদ্বেগের বিষয়। কারণ এভাবে সমাজের স্বাভাবিক শান্তি-শৃঙ্খলা অনিশ্চয়তার দিকে যায় এবং জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বোধ প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে ওঠে। এতে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও বাহিনীগুলোর ওপর মানুষের আস্থা কমে যায়।
অপরাধীদের মনে এমন অভয় সৃষ্টি হয়েছে যে, কোনো অপরাধ করেও আইন-বিচার ও শাস্তির উর্ধ্বে থাকা যাবে। এর প্রধান কারণ অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি কার্যকর হওয়ার দৃৃষ্টান্ত মোট সংঘটিত অপরাধের সংখ্যার তুলনায় খুবই কম। বিচারহীনতার এ পরিবেশ যে কোনো রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য প্রথমত, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব সম্পূর্ণ ভাবে দূর করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সততা, দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।