খুলনা | বুধবার | ০৯ জুলাই ২০২৫ | ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

সমীক্ষা কার্যক্রমের পর হবে জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হবে একনেকে

খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালে আসন থাকবে ১২০ ও শয্যা ৫০০

বশির হোসেন |
১২:৫৫ এ.এম | ০৭ জুন ২০২২


দক্ষিণালের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খুলনায় ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির পর তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে একনেকে। প্রথম পর্যায়ে কলেজে ১২০টি আসন এবং ৫০০ শয্যা করার প্রস্তাবনা দেওয়া হচ্ছে। এ তথ্য জানালেন প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প পরিচালক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সম্মতি প্রদান করেন। এরপর সরেজমিনে দেখে রূপসা সেতুর বাইপাস সড়ক ও লবণচরা থানার পাশে সংলগ্ন লবণচরা থানার পাশে জায়গা নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ২০ একর জমি চিহ্নিত করে খুলনা জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠায়। জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ‘খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ কার্যক্রম শুরু হয়। ২৯ নভেম্বর নিয়োগ করা হয় প্রকল্প পরিচালক। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম)’ পরিচালিত সমীক্ষা কার্যক্রম বা ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সম্পন্ন হয়েছে ডিজিটাল সার্ভের কাজ।
খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল প্রকল্প পরিচালক ডাঃ মোশাররফ হোসেন খন্দকার সময়ের খবরকে জানান, সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে একনেকে। একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্র আহŸান করা হবে। এরপর ঠিকাদার নিযুক্ত করা হলে তারা অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করবে। অবকাঠামো নির্মাণ কাজের দরপত্র আহŸান করবে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তিনি বলেন, এই কলেজ ও হাসপাতালটি হবে বিশ^মানের একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, কলেজে মোট ১২০টি আসন এবং হাসপাতালে ৫০০ শয্যা চালু করার জন্য তারা প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন। একাডেমিক ভবনে মোট ২৮টি বিভাগ থাকবে। প্রশাসনিক ভবন হবে ৮ তলা। প্রাকটিক্যাল কক্ষ, বিভিন্ন ধরনের ল্যাব, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক বিভাগ ও ৪০০ আসনের একটি লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে। থাকবে অডিটোরিয়াম, লেকচার গ্যালারি, শ্রেণিকক্ষ, টিউটোরিয়াল কক্ষ, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক কমন রুম, ক্যাফেটেরয়া প্রভৃতি। কলেজে মর্গ ও মরচুয়ারি এবং ডিএনএ টেস্টের আধুনিক ল্যাব থাকবে। এর পাশাপাশি অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপার ও হাসপাতাল পরিচালকের আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। 
তিনি জানান, হাসপাতালে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ, আউটটোর, ফার্মেসি প্রভৃতি থাকবে। নির্মাণ করা হবে হাসপাতাল ভবন, প্রশাসনিক ভবন। বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, হেলিপ্যাড, মসজিদ, পুকুর, মাঠ ও জিমনেসিয়াম তৈরি করা হবে।
সোমবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজে ‘খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা’ শীর্ষক প্রকল্পের মতামত জরিপ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 
খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে মতামত জরিপ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান। বক্তৃতা করেন খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ দ্বীন উল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ, খুলনা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ অসিম কুমার সাহা, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডাঃ শাহীদুজ্জামান বাবলু, খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা প্রমুখ।
সভায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, বিআইএম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  
সভায় খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। সভায় যাতে দ্রুত কলেজ ও হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা যায় সেজন্য গুরুত্বারোপ করা হয়। সভায় জানানো হয়, প্রস্তাবিত ডেন্টাল কলেজের জায়গার পাশেই শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। 
সভায় জেলা প্রশাসক জানান, দ্রুত জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসন আন্তরিক ভাবে কাজ করবে।