খুলনা | শুক্রবার | ১১ জুলাই ২০২৫ | ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

নুুন রুটে সক্রিয় মাদক কারবারীরা কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা নিন

|
১২:২৪ এ.এম | ২৭ নভেম্বর ২০২২


দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সব বয়সের মানুষই মাদকের দিকে ঝুঁঁকছে। এমনকি তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। একবার যারা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে তারা আর তা থেকে মুক্ত হতে পারে না। অন্যদিকে মাদক সহজলভ্য হওয়ায় নুুন করে অনেকেই আসক্ত হচ্ছে। এখন মাদক এতটাই সহজলভ্য যে শুধু শহর নয়, প্রত্যন্ত গ্রামেও হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবেই মাদকের প্রভাব কমানো যাচ্ছে না। বরং এর প্রভাব সামাজিক বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে মাদকের উপকরণে বদল ঘটছে। বছর দু’য়েক আগে ইয়াবা বিরোধী অভিযানের পর পত্রিকার খবরেই বলা হয়েছিল ইয়াবার চালান আরো বেড়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞই তখন বলেছিলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের অ্যাপ্রোচ ঠিক ছিল না। তার কারণেই সমস্যাগুলো হচ্ছে মাদক না কমে বরং পরিমাণে ও উপকরণে বাড়ছে।
মিয়ানমারে তৈরি মাদকের বড় বাজার বাংলাদেশ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচারে বেছে নেওয়া হয়েছে সাতটি নুুন রুট। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের মিজোরাম, আসাম ও মণিপুর হয়ে ত্রিপুরার দু’টি রুট, আর বান্দরবান, কক্সবাজার, বরিশাল, যশোর ও সাতক্ষীরার পাঁচটি রুট। গত সেপ্টেম্বরে পঞ্চম দ্বিপক্ষীয় সভায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে এসব রুটের ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। সীমান্তে যৌথ অভিযানের প্রস্তাবও দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তবে এখনো মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নুুন সাতটি রুটে বর্তমানে মিয়ানমার থেকে দেশে আসছে ইয়াবা ও আইস। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ গত আগস্ট মাসে ৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৪৪ পিস, সেপ্টেম্বরে আট লাখ ৩১ হাজার ৫৯৪ পিস ও নভেম্বরে পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯৩ পিস ইয়াবা এবং দুই কেজি ১২০ গ্রাম আইস উদ্ধার করে। মিয়ানমারের শান ও কোচিন প্রদেশে কারখানা স্থাপন করে ইয়াবা উৎপাদন করা হচ্ছে। শান প্রদেশ ও আশপাশের এলাকা থেকে বাংলাদেশে আসছে ইয়াবা ও আইস। দেশের কিছু বিত্তশালী মাদকসেবী এরই মধ্যে আইস গ্রহণ শুরু করেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানরাও সর্বনাশা এই নেশার জগৎ ঘিরে গড়ে তুলেছে বাণিজ্যিক সিন্ডিকেট।
মাদকের অপব্যবহার শুধু মাদকেই সীমিত থাকে না, আরো বহু অপরাধের কারণ হয়। অন্যদিকে মাদকসেবীরা যেমন পরিবারের জন্য, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। কাজেই ইয়াবা-আইসসহ সব ধরণের মাদক প্রতিরোধে সরকারকে কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।