খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৭ অগাস্ট ২০২৫ | ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি’র পদযাত্রায় হামলা, ভাঙচুর ও শতাধিক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:০৯ এ.এম | ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩


চলমান যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপিসহ সমমনাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি চলাকালে শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের বাধা, লাঠিচার্জ, ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষ এবং পদযাত্রা কর্মসূচি পন্ড হওয়ার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে গাড়ি, দলীয় কার্যালয় ও বাড়ি। আহত হয়েছে শতাধিক। পুলিশ আটক করেছে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীদের। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও আমাদের প্রতিনিধিদের প্রেরিত রিপোর্ট।
খুলনা : ১০ দফা দাবিতে বিএনপি’র পদযাত্রায় পুলিশের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের ধাওয়া, বাধা দেওয়া ও লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে ডুমুরিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও রূপসার আইচগাতি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক আবু হোসেন বাবু অভিযোগ করে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে পদযাত্রা শুরু করে ইউনিয়ন বিএনপি। এর পরপরই পুলিশ তাদের পদযাত্রায় বাধা দেয়।
এছাড়া রূপসা উপজেলার আইচগাতি ইউনিয়নের দেয়াড়া এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি ধাওয়া দেওয়া হয় ও ব্যানার কেড়ে নেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে অন্যান্য স্থানে কর্মসূচি পালন করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
যদিও বিএনপি’র কর্মসূচিতে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি বলে জানান রূপসা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন।
যশোর : জেলায় বিএনপি’র ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ও ফতেপুর ইউনিয়নের পদযাত্রা থেকে দুই কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকেল ৩টায় উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হন। কিছুক্ষণের মধ্যে বিএনপি’র প্রয়াত কেন্দ্রীয় নেতা তরিকুল ইসলামের স্ত্রী যশোর জেলা বিএনপি’র আহবায়ক নার্গিস বেগম সেখানে পৌঁছান। ১০ দফা দাবিতে বাহাদুরপুর থেকে বিএনপি’র পদযাত্রা শুরু হয়। শহরের খাজুরা বাস্ট্যান্ডের দিকে পদযাত্রা অগ্রসর হয়। নওয়াপাড়া মেহগনি মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ ব্যানার কেড়ে নেয়। ব্যানার বাদেই পদযাত্রা চলতে থাকে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে পৌঁছালে পুলিশ লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়েন। সেখান থেকে এক কর্মীকে আটক করে পুলিশ। পদযাত্রাটি শহরের শেখহাটি হাইকোর্ট মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত পথসভার মধ্যদিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে পন্ড হয়ে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে জানতে চাইলে যশোর জেলা বিএনপি’র আহবায়ক নার্গিস বেগম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পদযাত্রাও সরকার সহ্য করতে পারছে না। আমরা পদযাত্রা থেকে শ্লোগান পর্যন্ত দেইনি। শুধু ১০ দফা দাবি সম্বলিত প্রচারপত্র পথচারী ও দোকানে দোকানে বিলি করা হয়েছে। এতেই পুলিশ পিছন থেকে অতর্কিত আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পদযাত্রা পন্ড করে দেয়। এ সময় কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটকও করা হয়েছে।’
একই সময় বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে ফতেপুর ইউনিয়নে পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি যশোর-নড়াইল সড়কের দায়তলা এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়। বাগবিতন্ডার একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় নেতা-কর্মীরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পদযাত্রা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে মাসুদুর রহমান নামের স্থানীয় এক যুবদলের নেতাকে পুলিশ আটক করে।
তবে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জুয়েল ইমরান দাবি করেন, কোথাও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেনি। 
মোংলা (বাগেরহাট) : ১০ দফা দাবিতে মোংলায় বিএনপি’র পদযাত্রা শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে মোংলার গুনাই ব্রিজ সংলগ্ন কবিরাজবাড়ী এলাকা থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ পদযাত্রায় স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা অংশ নেন। এ পদযাত্রার উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের বাগেরহাট জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি পালনকে ঘিরে গত শুক্রবার রাতে ও শনিবার ভোরে পুলিশ বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল­াশী, হয়রানী ও ধরপাকড় চালাচ্ছেন। তিনি পুলিশের এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে।
এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছেন মোংলার ৬টি ইউনিয়নের বিএনপি ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।  এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবু হোসেন পনি, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক শেখ রুস্তম আলী, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক পংকজ বিশ্বাস ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা। 
এদিকে রামপাল উপজেলারও ১০টি  ইউনিয়নে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছেন। রামপালেও শনিবার সকালে এ পদযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাগেরহাট জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। সেখানকার পদযাত্রা কর্মসূচিতেও প্রধান অতিথি ছিলেন শেখ ফরিদুল ইসলাম। 
কেশবপুর : উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়নে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত পদযাত্রা কর্মস‚চি চলাকালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ হামলা চালিয়ে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৬ নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়ন বাদে ত্রিমোহিনী, সাগরদাঁড়ি, মজিদপুর, বিদ্যানন্দকাটি, মঙ্গলকোট, পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরীঘোনা, সাতবাড়িয়া ও হাসানপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে একই সময় অনুষ্ঠিত পদযাত্রা এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এর মধ্যে পথসভা চলাকালে ৫টি ইউনিয়নে আ’লীগ ও যুবলীগের যৌথ হামলায় বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৬ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতের খবর শুনে তাদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ।এদিকে, ওই দিন বিকালে উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত পদযাত্রা ইউনিয়নের বিভিন বাজার প্রদক্ষিণ শেষে ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে ইউনিয়নের দেউলি বাজারে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, থানা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক রেজাউল ইসলামসহ অনেকে।
থানা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, পাজিয়া, মঙ্গলকোট, গৌরীঘোনা, মজিদপুর ও হাসানপুর ইউনিয়নের পথসভায় আ’লীগ ও যুবলীগ হামলা চালিয়ে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের কমপক্ষে ১৬ নেতা-কর্মীকে আহত করে। আহতরা হলেন বিএনপি নেতা কাদের খা, ইয়াসিন আলী শেখ, মুজিবর রহমান, সেলিম সানা, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ ইসলাম, ফারুক হোসেন, নজরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, ফজর আলী, লেওকাত হোসেন, যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা শরিফুল ইসলাম, আব্দুল মমিন, আশরাফুজ্জামান রূমি ও বাবু। এর মধ্যে বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, মোহাম্মদ ইসলাম, ফারুক হোসেন, আব্দুল কাদের ও মজিবর রহমান মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
মাগুরায় : কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে দলটি। শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার ৩নং কছুন্দী ইউনিয়ন বিএনপি এ পদযাত্রার আয়োজন করে। পদযাত্রা শেষে কছুন্দি মাদরাসা মাঠে হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ।
জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ ফারুকুজ্জামান ফারুক অভিযোগ করে বলেন, পদযাত্রা শেষে পুলিশ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক মীর ইমন ও ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সোহেল আহম্মেদ, কৃষক দলের সদর থানা সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেনকে চাউলিয়া ইউনিয়নের ধলহরা বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দলের বা বিএনপি’র কোনো নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করেনি।
পিরোজপুর : যুব ও ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেও পিরোজপুরে বিএনপি’র পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এ সময় হামলায় জেলার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন জানান, জেলার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা দিনব্যাপী বিভিন্ন স্থানে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় এবং পুলিশ কর্মসূচিতে বাধা দেয়। এতে জেলার সদর উপজেলার শিকদার মলি­ক ইউনিয়নে শাসক দলের হামলায় ৪ জন, মঠবাড়িয়ায় ১২ জনসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।  
তিনি আরও জানান, বিকেলে তিনি জেলার কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়া এলাকায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ তাতে বাধা ও হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও শিকদার মলি­ক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার কামরুজ্জামান চাঁন বলেন, দুপুরে স্থানীয় বিএনপি’র উদ্যোগে বের হওয়া পদযাত্রায় ছাত্র ও যুবলীগ হামলা করে। ওই হামলায় জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ ইসলাম মাহিম, ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুর রহমান, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ আসাদ মোল­া ও মোঃ মোরছালিন শেখ আহত হন।
জেলার মঠাবাড়িয়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ রুহুল দুলাল বলেন, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে সকাল থেকে দিনব্যাপী লিফলেট বিতরণ, মিছিলসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় থানা পুলিশ ও শাসক দলের নেতাকর্মীরা তাতে বাধা দেয়। উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় ছাত্র ও যুবলীগ হামলা করে। ওই হামলায় মোঃ ফারুক হোসেন, মোস্তফা মোল­া, ইয়াসিন, মিরাজ জমাদ্দার, সরোয়ার হোসেন, রিপন হাওলাদার, মিজানুর রহমান, রফিক রাজা, ফোরকান, রিপন জমাদ্দারসহ ১২ নেতা-কর্মী আহত হন।
জেলার নাজিরপুর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক এড. মিজানুর রহমান দুলাল বলেন, পুলিশ ও স্থানীয় শাসক দলের নেতা-কর্মীদের বাধা উপেক্ষা করে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন। তবে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুলসহ তিনি একটি কর্মসূচিতে থাকাকালে পুলিশ তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ ছাড়া পুলিশ উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য শঙ্কর কুমার তরুয়াকে (৫০) আটক করেছে।
এদিকে পুলিশের একাধিক সূত্রের দাবি জেলার কোথাও বিএনপি’র কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়নি। একই ধরনের বক্তব্য শাসক দলের পক্ষ থেকে।
কুষ্টিয়া : জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব খন্দকার তসলিম নিশাতসহ ১১ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।  শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের কমলাপুর বাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  
তিনি বলেন, জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিবসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে কেন আর কী কারণে আটক করা হয়েছে এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ : পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুর ১টার দিকে আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচরুখী এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
সিরাজগঞ্জ : জেলায় উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ১৫-২০ জন আহত হয়েছে। 
ঝালকাঠি : ১০ দফা দাবিতে জেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা করে বিএনপি। এতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলায় দলটির ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঝালকাঠি বিভিন্ন ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। 
জামালপুর : জেলার সদর উপজেলায় আ’লীগ-বিএনপি’র সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৪৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এসময় ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার তিতপল­া ইউনিয়নের কামালখান বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী: জেলার পলাশ উপজেলায় পদযাত্রা কর্মসূচিতে কয়েক দফা বাধা দেয়ার পর তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশ কর্মসূচি পন্ড করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের চরনগরদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কর্মসূচিতে ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মঈন খান।
ময়মনসিংহ : জেলার  তিনটি উপজেলায় বিএনপি’র পদযাত্রায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। এ সময় ভাঙচুর হয়েছে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন। শনিবার বিকেলে জেলার গৌরীপুর, ধোবাউড়া ও গফরগাঁও উপজেলায় আ’লীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা ও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের।  
ল²ীপুর: জেলার কমলনগরে আ’লীগ এবং বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দু’পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।