খুলনা | রবিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৫ | ২৬ আশ্বিন ১৪৩২

ছাত্রলীগ নেতা রোহান হত্যা মামলার সব আসামি খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০৫:৩৭ পি.এম | ১২ এপ্রিল ২০২৩


খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও সিটি কলেজ নেতা সৈকত হাসান রোহান হত্যা মামলার সকল আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। বুধবার খুলনা বিভাগীয় জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো এ আদেশ প্রদান করেন।   খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার দু’ভাই মিজান ওরফে দাদো মিজান শেখ (৩৮) ও মিরাজ শেখ (৩৩)। তারা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার নাতাবাড়িয়া গ্রামের সেকেন্দার শেখের ছেলে। পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট ৯নং গলির শেখ জাহাঙ্গীরের দু’ছেলে আল আমিন (৪০) ও তৌহিদ শেখ (২৮),  ৩১/১, মিস্ত্রিপাড়া খালপাড় রোডের আবুল কালামের ছেলে মুরাদ ওরফে কালা মুরাদ (৩০), পূর্ব বানিয়াখামার আব্দুল হক সড়ক ড্রেন গলির আজিজ শেখের ছেলে ইকরাম ওরফে একরাম শেখ (৪৫), পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট বিসমিল­াহ মহল­ার আব্দুল হাকিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলাম শিকদারের ছেলে মোঃ ইব্রাহিম শিকদার ওরফে খবিস (২২), ২৬/৪৩, পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট চৌধুরী গলির মৃত হাফিজুর রহমান সরদারের ছেলে হাসানুজ্জামান সরদার ওরফে আকাশ ওরফে কালা আকাশ (২৮), ১/ক, শেখপাড়া বাগান বাড়ির শহীদ আবুল সড়কের সাত্তার বিশ্বাসের ছেলে তুহিন ওরফে কালা তুহিন (২৮), ৫৭ আহসান আহম্মেদ রোডের রুস্তুম আলীর ছেলে মোঃ ইব্রাহিম আলী ওরফে রাজন (২৬), পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার শেষ ঠিকানা গলির মোঃ বাবুল মাতুব্বরের ছেলে রিয়াজুল (৩২), ১৯/ক মিয়াপাড়া বাগানবাড়ির সিরাজের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোঃ বেল­াল শেখ (২২), সে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার কাচিকাটা গ্রামের মোঃ হারুন শেখের ছেলে, মিয়াপাড়া পাইপের মোড়ের হায়দারের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (২৯), ২০ পূর্ব বানিয়াখামারের মৃত হাজী আশরাফ আলীর ছেলে মোঃ জয়নাল আবেদীন ওরফে জনি (৩৫) ও ২২ রোকন উদ্দিন সড়কের মোঃ আবু আনসারীর ছেলে মোঃ শাহদাত আনসারী ওরফে ছোট (২৪)।   
আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী ছায়েদুল হক শাহিন নথীর বরাত দিয়ে জানান,  ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট রাত পৌনে ১১টার দিকে নগরীর আহসান আহমেদ রোডস্থ পিটিআই মোড় সংলগ্ন তপন স্টোরের সামনে ১০/১২ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী পূর্ব শত্র“তার জেরে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও সরকারি সিটি কলেজের নেতা সৈকত রোহান (২৫) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। এ সময় তারা রোহানের দু’হাতের কব্জি, দু’পায়ের রগ কেটে মৃত ভেবে ফেলে পালিয়ে যায়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে  খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত পৌনে ১২টার দিকে রোহানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা রাশিদা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন যার নং-২। হত্যাকান্ডের তিন সপ্তাহ পর ১১ জনের বিরুদ্ধে সংশোধিত এজাহার জমা দেন রোহানের মা রাশিদা বেগম। ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র এসআই মোঃ সফিউল আলম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. আরিফ মাহমুদ লিটন।      
সূত্র জানায়, নগরীর মিয়াপাড়া পাইপের মোড়ের ভাড়া বাসায় রোহানের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আছর বাদ নামাজে জানাজা শেষে লাশ সন্ধ্যার কিছু আগে রওনা দিয়ে রোহানের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার সদর থানাধীন পাতিলাখালী পাইকবাড়ী নিয়ে দাফন করা হয়। নিহত রোহানের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি মারামারি ও ডাকাতির ৪ প্রস্তুতিসহ ১১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা সদর থানায় ১টি হত্যা, ১টি ডাকাতি প্রচেষ্টা, ৬টি মারামারি ও চাঁদাবাজি এবং দ্রুত বিচার আইনে একটিসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও হরিণটানা থানায় রোহানের বিরুদ্ধে একটি মারামারি মামলা রয়েছে। নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে বাস কাউন্টার ভাঙচুরসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলো রোহান। নগরীর অপর এক শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ পলাশের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলো রোহান। পলাশ এবং রোহান একসাথে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে বেড়াতো।