খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

চলচিত্রে মিয়া ভাই খ্যাত নায়ক ফারুক আর নেই

খবর প্রতিবদেন |
০১:১৯ এ.এম | ১৬ মে ২০২৩


ঢাকাই চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই খ্যাত কিংবদন্তি নায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আর নেই (ইন্নালিল­াহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আমরাতো আল­াহর এবং আল­াহর কাছেই ফিরে যাবো)। তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক ফারুক হিসেবে পরিচিত হলেও তার আসল নাম আকবর হোসেন পাঠান।
নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সিঙ্গাপুরে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়, বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে তার বাবা মারা গেছেন। রওশন আরও জানান, তার বাবা ফারুকের মরদেহ আজ মঙ্গলবার ভোরের ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হবে। 
অভিনেতা ফারুক দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ। সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি।
নায়ক ফারুক ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমায় তার যাত্রা শুরু হয়। প্রথম সিনেমায় তিনি কবরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। এরপর ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’ এবং ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ দু’টি সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন ফারুক। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা নায়ক ফারুক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নায়ক ফারুক অভিনয়ে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়। তার অভিনীত উলে­খযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে সারেং বৌ, লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, মিয়া ভাই, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে ইত্যাদি।
প্রথম জানাজা সিঙ্গাপুরে : সিঙ্গাপুরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আজ মঙ্গলবার ভোরে দেশে আনা হবে মরদেহ। সকাল ৭.৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার ফ্লাইটে তার মরদেহ আসবে। নায়ক ফারুকের স্ত্রীর বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। তিনি জানান, সকাল ৯টায় ফারুকের মরদেহ উত্তরা বাসায় নেয়া হবে। সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য বেলা ১১টায় নেয়া হবে জাতীয় শহিদ মিনারে। এরপর নেয়া হবে  বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএফডিসিতে দুপুর ১.৩০ মিনিটে। সেখানে বাদ জোহর জানাজা সম্পন্ন করা হবে। বিকাল ৫টায় বাদ আসর গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে সন্ধ্যা ৭টায় গ্রামের বাড়ি কালিগঞ্জে তাকে দাফন করা হবে।
বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন : গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুক। উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের সোম টিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত আছেন তার বাবা আজগর হোসেন পাঠান। সেখানেই ফারুকের মরদেহ দাফন করা হবে। সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ভগ্নিপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কেবিএম মফিজুর রহমান খান। তিনি বলেন, জীবিত অবস্থায় ফারুক অসিয়ত করে গেছেন। মৃত্যুর পর যেন তাকে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবা আজগর হোসেন পাঠানের কবরের পাশে শায়িত করা হয়।