খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

আরেক দফা বৃদ্ধি পেল বিভিন্ন ঔষধের মূল্য

|
১২:০৮ এ.এম | ৩১ মে ২০২৩


নিত্যপণ্যের সঙ্গে দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তৈলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অধিকাংশ মানুষ বিশেষত সীমিত ও নিম্নআয়ভুক্ত পরিবারগুলি যখন জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছে, তখনই আরেক দফা বৃদ্ধি পেল জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ঔষধের মূল্য। দেশের শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি ঔষধের মূল্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে এবং আরও ১০ কোম্পানি তাদের উৎপাদিত ঔষধের মূল্য বাড়াতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করেছে। অর্থাৎ, এই দফায় প্রায় সকল প্রকার ঔষধের মূল্য বৃদ্ধি পেতে চলেছে। স্মরণ করা যাইতে পারে, গত জুনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বহুল ব্যবহৃত ২০টি ঔষধের মূল্য ১৩২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার একমাস পর অত্যাবশ্যকীয় ৫৩ প্রকার ঔষধের মূল্য বাড়িয়েছিল সরকার। গত নভেম্বরে একটি কোম্পানির ২৪ প্রকার ঔষধের মূল্য প্রকারভেদে ৫ হইতে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। 
অধিকতর উদ্বেগজনক হল, সরকার-নির্ধারিত মূল্যে কোনো ঔষধই বাজারে বিক্রয় হয় না। যেমন সা¤প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলেছে, তারা ঔষধের মূল্য ১০ হতে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। বাস্তবে প্রথমেই যেমনটি বলা হয়েছে, এই মূল্যবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঘটেছে। উপরন্তু খুচরা বিক্রেতা ঔষধালয়গুলি কোম্পানি নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রয় করছে, এমনটা ভাবার সুযোগ কম। কারণ, কোনো পর্যায়েই বাজার তদারকির কাজটা অন্যান্য ক্ষেত্রের মতোই ঠিকঠাক হয় না। উলে­খ্য, বিদ্যমান আইন অনুসারে অত্যাবশ্যকীয় বলে তালিকাভুক্ত ১১৭টি ঔষধের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দায়িত্ব হইল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। অন্যান্য ঔষধের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলির প্রস্তাব অনুসারে অধিদপ্তর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে একজন মানুষের মোট চিকিৎসার ৬৪ শতাংশ ব্যয় হয় ঔষধ ক্রয়ে। ফলে দফায় দফায় এই জীবন রক্ষাকারী দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি মানুষের কাটা ঘায়ে লবণ ছিটানোর মতো হবে, সন্দেহ নেই। সংশ্লিষ্ট খাত বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ঔষধের মূল্যবৃদ্ধি একদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড় সংকট সৃষ্টি করতে পারে, অপরদিকে বাজার তদারকি না থাকায় নকল, ভেজাল আর নিম্নমানের ঔষধ বাজারে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কাও আছে। 
আমাদের প্রত্যাশা, সরকার অবিলম্বে ঔষধের সা¤প্রতিক বর্ধিত মূল্য স্থগিত করে গণমুখী একটা প্রক্রিয়া কার্যকর করার লক্ষে সচেষ্ট হবে।