খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

কেসিসি নির্বাচন : সকল প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ

আশরাফুল ইসলাম নূর |
১২:৪২ এ.এম | ১০ জুন ২০২৩


আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছ খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের সকল প্রচার-প্রচারণা। আগামী সোমবার (১২ জুন) ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে দক্ষিণ বাংলার সর্ববৃহৎ নগরী খুলনায়। বিরামহীন প্রচারণার শুক্রবারেও নানা প্রতিশ্র“তি আর ভোটের আবেদন নিয়ে নগরবাসীর দ্বারে দ্বারে ছুটে গেছেন প্রার্থীরা। পথসভা, কর্মীসভা ও গণসংযোগসহ নানা উপায়ে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তারা। শেষ মুহূর্তে এসেও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ জমা পড়েছে।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতায় কোনো কমতি রাখেনি নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আ’লীগের একক প্রার্থী হিসেবে তালুকদার আব্দুল খালেক প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী না হলেও তার সাথে লড়ছেন জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুল ইসলাম মধু, ইসলামী আন্দোলনের মোঃ আব্দুল আউয়াল, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান (মুশফিক) ও জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন।
মেয়র পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই না থাকলেও জমে উঠবে কাউন্সিলর নির্বাচন। ২৪ ও ১৩নং ওয়ার্ডে দু’জন কাউন্সিল বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হলেও লড়াই হবে অন্য সবগুলো ওয়ার্ডে। এবারের নির্বাচনে সাধারণ ৩১টি ও সংরক্ষিত ১০টি নিলে মোট ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন ১৭৫ জন প্রার্থী।
মাত্র একদিন পরেই বহুল প্রতীক্ষিত কেসিসি নির্বাচন। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে স্থাপন করা প্রায় দুই হাজার ক্যামেরার মাধ্যমে ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সরাসরি মনিটরিং করবে সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা।
জানা গেছে, কেসিসিতে এ বছর ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৮ জন। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে তার ভোট প্রদান করবেন। ভোটগ্রহণ কার্যক্রম সহজ করতে এসব কেন্দ্রে এক হাজার ৭৩২টি বুথ স্থাপন করা হচ্ছে। ভোট গ্রহণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২৮৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, এক হাজার ৭৩২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৩ হাজার ৪৬৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। 
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন জানান, কেসিসি নির্বাচনে এবার ভোট কেন্দ্র ২৮৯টি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের সামনে একটি করে ক্লাজ সার্কিট ক্যামেরা থাকবে। এছাড়া এক হাজার ৭৩২টি ভোট কক্ষের প্রতিটিতে একটি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। আগামী ১২ জুন ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
সাধারণ ভোটকেন্দ্রের নিরপত্তায় একজন অস্ত্রসহ এসআই/এএসআই একজন, তিনজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন আনসার (পিসি), অস্ত্রসহ একজন (এপিসি), ১০ জন আনসার সদস্যসহ মোট ১৬ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী লোক নিয়োগ থাকবে। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসারের সমন্বয়ে প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স, তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি থানায় একটি করে রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। র‌্যাবের টিম ও বিজিবি নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও কেন্দ্র অনুযায়ী থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত টিম।
শেষ মুহূর্তে বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ : নগরীর ১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান ইফতেখার চালুর বিরুদ্ধে ফের আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদ্ব›দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী আনিসুর রহমান বিশ্বাস গতকাল শুক্রবার বিকেলে আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে কারণদর্শাও নোটিশ দিয়েছেন।
অভিযোগ করা হয়েছে-অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসানের প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একটি বিশেষ মহল গত ৫ জুন মধ্য রাত থেকে ১৬নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মোটরসাইকেল ও গাড়ি বহর নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান ইফতেখার চালু প্রতীকের শ্লে¬াগান নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। যা জনমনে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে। গত ৭ জুন রাত ৩টা পর্যন্ত ১৬নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে হাসান ইফতেখার চালুর অসংখ্য মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে মিছিল সহকারে সন্ত্রাসী কায়দায় মহড়া দিয়ে জনমনে ভীতির সঞ্চার করছে। ওইদিন রাত ১টার সময় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রায়েরমহল সুলতান মোল­ার মিলের অভ্যন্তরে ডেগ চড়িয়ে ভুড়িভোজের আয়োজন করে নিরীহ ভোটারদের জোর করে সেখানে নেয়ার উদ্যোগ নেয়। বিষয়টি তাৎক্ষনিক পুলিশ বন্ধ করে দেয়। একইদিন এটার দিকে ফারুকিয়া মসজিদ রোড এলাকায় তারা একসঙ্গে বের হয়ে সাধারণ মানুষদের ঘুম থেকে তুলে নানা ধরনের হুমকি দেয়। যারা গেট খোলেননি তাদের বাড়িতে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। যা রীতিমধ্যে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছে। আগামী ১২ জুন ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত কমে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিশ্বাস।