খুলনা | বুধবার | ০৯ জুলাই ২০২৫ | ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

একনেকে অনুমোদনের সাড়ে তিন বছরেও কাজ শুরু হয়নি কেডিএ’র তিনটি সংযোগ সড়কের

এস এম আমিনুল ইসলাম |
০১:২৫ এ.এম | ১৮ অগাস্ট ২০২১

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)-এর তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দেখা দিয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। একনেক সভায় অনুমোদনের সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনও আরম্ভ হয়নি সড়ক নির্মাণ কাজ। এ অবস্থায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কেডিএ’র তথ্য অনুযায়ী, খুলনা নিরালা থেকে সিটি বাইপাস, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায়ের মহল এবং দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তুহারা পর্যন্ত তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণে পরিকল্পনা গ্রহন করে সংস্থাটি। এর মধ্যে প্রথম সড়কটি নিরালা ১নং সড়ক হয়ে দীঘির পাশ দিয়ে সোজা বাইপাসে গিয়ে মিশবে। এ সড়কটি হবে আড়াই কিলোমিটার। দ্বিতীয় সড়কটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায়েরমহল পর্যন্ত ৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং তৃতীয় দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তুহারা পর্যন্ত ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার। ২০১৮ সালের ফেব্র“য়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। এরপর সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  প্রকল্পের কাজ দেখাশোনা জন্য ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি পিকআপ গাড়ি কেনা হয়েছে। যা অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। রড পরীক্ষায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ হাজার কেএন ক্ষমতার একটি ইউটিএম মেশিন কেনা হয়েছে। যা সংস্থাটির গ্যারেজে প্যাকেটবন্দি হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া জমি অধিগ্রহনের আগেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ এবং সম্পন্ন হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকা ট্যুর। কিন্তু প্রকল্পের মূল সড়ক নির্মাণ কাজ এখনও শুরু করা যায়নি। শুধুই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সড়কের এ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনে তৎপরতা বেড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এস এম কামাল হোসেন বলেন, শহর স¤প্রসারিত হয়েছে। এখন সহজে কম সময়ে শহরে প্রবেশে এ সড়ক বাস্তবায়ন জরুরি। কিন্তু সড়কের জন্য নির্ধারিত জায়গায় কিছু দৃশ্যমান হচ্ছে না। শুধু বছর খানেক আগে কেডিএ’র লোকজন এসে লাল পতাকা দিয়েছিল। সেগুলোও কারা তুলে নিয়ে গেছে। মানুষ এ প্রকল্পের সুফল কবে পাবে? 
সুজন-এর জেলা সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয়ের অভাব, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা একদম নেই। পরিকল্পিতভাবে ধাপে ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা উচিত কিন্তু তা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে গাফিলতি ও দুর্নীতি করার চরম মানসিকতা কাজ করে। যার কারনে কেনা-কাটা, বিদেশ সফরে অতি-আগ্রহ দেখায় কর্মকর্তারা। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এসব প্রকল্পে স্থানীয়দের স¤পৃক্ত করা উচিত। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে ব্যয় বেড়ে যায়, অর্থের অপচয় হয় ও জনগনের ভোগান্তি বাড়ে। তাই জনস্বার্থে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক হওয়া ও কাজে মনোযোগী হওয়া উচিত।
প্রকল্প পরিচালক মোতুজা আল-মামুন বলেন, তিনটি সড়কের মধ্যে দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তুহারা সড়কের জেলা প্রশাসনের নিকট ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব করা হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায়ের মহল সড়কের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু সংশোধনী দিয়েছে। আগামী মাসে ফের পাঠানো হবে। এছাড়া করোনার কারণেও অগ্রগতি কম।