খুলনা | বুধবার | ০৯ জুলাই ২০২৫ | ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

শ্যামনগরে মূল্যবান সরকারি গাছ কর্তণ

শ্যামনগর প্রতিনিধি |
১১:১৮ পি.এম | ১৫ অগাস্ট ২০২৩


সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ভুরুলিয়া ইউনিয়নে সরকারি খাস সম্পত্তিতে বেড়ে উঠা লক্ষাধিক টাকার মূল্যে মেহগনি গাছ কর্তণ করেছে প্রভাবশালীরা। ৩ জন নায়েবের নিষেজ্ঞা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে গাছটি প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় বিক্রয় করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে মুরাদ গাইন গং এর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুরুলিয়া মৌজার বি,এস- ০১ খতিয়ানে ১২০ দাগে ৩৯ শতক খাস জমির উপর বহু পূর্ব হতে সরকারিভাবে মেহগনি গাছ, বাঁশ ঝাড় এবং বিভিন্ন প্রকার বনজ ও ফলজ গাছ লাগানো হয়। বর্তমান গাছ গুলোর মূল্য প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা। এ জায়গায় বেড়ে ওঠা সর্ববৃহৎ মেহগনি গাছটি বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সর্ববৃহৎ মেহগনি এ গাছটি লাভ ও লোভের লালসায় অবৈধভাবে সরকারি মূল্যবান গাছটি ভুরুলিয়া গ্রামের মুরাদ আলী গাইন, মতিয়ার গাইন, মিজানুর গাইন ও মোয়াক্ষীর গাইন গাছটি কর্তণ করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা ভুরুলিয়ার কাশিমপুর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে গাছটি কর্তণ করে নেন। পরবর্তীতে নায়ের গগন চন্দ্র মন্ডলের জব্দকৃত সরকারি মেহগনি গাছের গুড়ি বা কাঠ গুলো মুরাদ গাইন গং প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় বিক্রয় করার অভিযোগ অদৃশ্য শক্তিতে নায়েব গগন চন্দ্র মন্ডলের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সরকারি খাস জায়গার গাছ আত্মসাৎ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ভুরুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গগন চন্দ্র মন্ডল ও পিয়ন আরিফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কর্তণের সত্যতা পান এবং গাছের গুড়িগুলো জব্দ করে সেখানে রেখে আসেন। গাছ কর্তণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে তিনি ঘটনা স্থান ত্যাগ করে চলে আসেন।
ইতিপূর্বে সরকারি এ সম্পত্তিতে জনসাধারণের পানি পথ সংস্কার, সরকারি মূল্যবান গাছ রক্ষা, বাঁশ ঝাড় রক্ষা ও খাস জমি পুনরুদ্ধারের লক্ষে এলাকাবাসী ভুরুলিয়া ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত আবেদনটির কার্যকারিতা দ্রুত পরিলক্ষিত অদৃশ্যশক্তিতে হচ্ছে না। এলাকাবাসীর দাবি ছিল- ভুরুলিয়া হাইস্কুল, সাইক্লোন শেল্টার, পোস্ট অফিস, মসজিদ সহ স্থানীয় জনবসতির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ। এ পথ সংস্কারে মুরাদ গাইন গং বাঁধা সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছিল। সরকারি ৩৯ শতক খাস জমি মুরাদ গাইন গং অবৈধভাবে দখল করার পাঁয়তারা করছে মর্মে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। তৎকালিন নায়ের নন্দলাল সরেজমিনে তদন্ত করে পানি নিষ্কাশনের পথ সংস্কারের আশ্বাস দেন এবং সরকারি সম্পত্তিতে বেড়ে উঠা ফলজ ও বনজ কোন প্রকার গাছ কর্তণ করতে মুরাদ গাইন গং দের নিষেধাজ্ঞাও প্রদান করেছিলেন। কিন্তু মুরাদ গাইন গং গাছ কর্তণ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মূল্যবান বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তণ করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। একই অভিযোগে তৎকালিন নায়েব আব্দুল­াহ আল মামুন সরকারি এ জায়গায় বেড়ে উঠা গাছ কর্তণ নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন মুরাদ গাইন গং এর বিরুদ্ধে। খাস জমি ও মুরাদ গাইনের ভিটা পাশাপাশি হওয়ায় মুরাদ গাইন গং অবৈধভাবে খাস জমি দখল করে তার ভিটার সাথে একাকার করতে পাঁয়তারা করছে। স¤প্রতি মূল্যবান মেহগনি গাছটি কর্তণ করে আত্মসাৎ ঘটনা ফাঁস হলে কর্তণকৃত গাছটির গোঁড়ার উপরের অংশে মাটির প্রলেপ দিয়ে তার চতুর্দিকে কলা গাছ লাগানো হয়েছে। 
যথাযথ তদন্ত করা হলে সত্যতা প্রকাশ পাবে।
ভুরুলিয়ার নায়েব গগন চন্দ্র মন্ডল বলেন, মূল্যবান মেহগনি গাছটি কর্তণ করে আত্মসাৎ করায় আইনী পদক্ষেপ নিতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মুরাদ গাইনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও না পাওয়ায় তার ভাষ্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ৩ জন সরকারি কর্মকর্তা (নায়েব) কে অবজ্ঞা করায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সরকারি গাছ কর্তণকারীদের বা আত্মসাৎ কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, সরকারি গাছ রক্ষা ও খাস জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।