খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

দেউলিয়া হয়ে বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করছে সরকার: ফখরুল

খবর প্রতিবেদন |
০২:২৩ পি.এম | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩


দেউলিয়া হয়ে সরকার বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকার এখন বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করছে। এটা কখন করে? দেউলিয়া হলে। কিন্তু এসব করে কোনো লাভ নেই।’

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রি. জে. আ স ম হান্নান শাহ’র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সিনিয়র নেতারা কেউ বাকি নেই যার মামলা শেষ পর্যায়ে নিয়ে না এসেছে। এজন্য বিশেষ সেল করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের সরকারি কমকর্তা এদের বিরুদ্ধে কথা বলায় মারাই গেল। আজকে সত্য লিখলেই জেলে যেতে হচ্ছে। এই দেশ আমরা কেউ চাইনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলে বিএনপি বিপদে আছে। আরে বিএনপি কোনো বিপদে নেই, বিএনপি আন্দোলনের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিপদে আছে জনগণ। সরকার দেশের মূল সত্তাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা শুধু ভুখণ্ডের জন্য যুদ্ধ করিনি। একটি রাষ্ট্র কাঠামোর জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্য যুদ্ধ করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ রেস্টুরেন্টে কথা বলা যাবে না, বিয়েবাড়িতে গিয়ে সাবধানে কথা বলতে হয়। কথা বলার ওপর নিরাপত্তা নির্ভর করে।’

‘টকশোতে যাওয়ার আগে সাবধান করে দেওয়া হয়। এমনকি ছেলে মেয়েকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কার বাসায় যাব, কার সাথে বসব, কোন অনুষ্ঠানে যাব সব জায়গাই নজরদারি।-বলেন ফখরুল।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিসিএসে মেধাবী ছেলেরা লিখিত পরীক্ষায় পাস করলেও যদি তার পরিবার বিএনপি করে তাহলে তাকে ভাইভায় পাস করানো হয় না। আর কেউ পাস করলেও তার চাকরি মেলে না। বিএনপির সঙ্গে কারও নূন্যতম সম্পর্ক থাকলে তার আর প্রমোশন হয় না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উন্নয়ন নিয়ে জনগণের সাথে সরকার ছলচাতুরি করেছে। সব করেছে ঋণ করে। ঋণের বোঝা জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে আজকে সরকার বাহবা নিতে চায়। ঋণ করে পোলাও মাংস খাওয়ার ভেতরে কোনো কৃতিত্ব নেই।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে র‌্যাবসহ নয়জনের ওপর স্যাংশন হয়েছিল। এবার ভিসানীতি। ভিসানীতি কাদের বিরুদ্ধে হয়। যারা গণতন্ত্র হত্যাকারী ও দুর্নীতিবাজ। এই ভিসানীতিতে সাংবাদিক, বিচারপতি, আমলা, রাজনীতিবিদ, সেনাবাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা.. তাহলে বাদ পড়বে কে? এটি খুশির কথা নয়, লজ্জার। এর জন্য দায়ী এই কর্তৃত্ববাদী সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলে খালেদা জিয়া দণ্ডিত। কিসের দণ্ড? কিসের মামলা? যে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে তা এখন নয়কোটি টাকায় রূপান্তরিত হয়েছে। আসলে খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে রাখা যাবে না। তাকে বাইরে রাখা যাবে না। জিয়া পরিবারের কথা শুনলেই এরা ভয় পায়। তারপরও এরা বলবে দেশে আইনের শাসন আছে। আবার বলে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এদের কথা শুনলে পাগলও হাসে।

প্রয়াত হান্নান শাহ'র স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১/১১তে যখন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জেলে নেওয়া হলো তখন তিনি জীবনবাজি রেখে যে ভূমিকা রেখেছেন জাতি তা আজীবন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে। হান্নান শাহ যে গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা পুনরুদ্ধার করতে পারলেই পরপারে থেকেও তিনি শান্তি পাবেন।

আ স ম হান্নান স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শাহ রিয়াজুল হান্নান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল অব. জয়লান আবেদীন, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন কবির খান, ওমর ফারুক শাফিন, সাংবাদিক নেতা রাশেদুল হক, গাজীপুর জেলা বিএনপি নেতা খন্দকার আজিজুর রহমান, ডা. শফিক প্রমুখ।