খুলনা | শনিবার | ১০ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করুন

|
১২:০৪ এ.এম | ০১ অক্টোবর ২০২৩


দেশের বেশির ভাগ মানুষের বসবাস গ্রামাঞ্চলে। তাদের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার মধ্যে আছে ইউনিয়ন ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, উপজেলা স্বাস্থ্যব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং সেবার পরিধি বাড়ানো। সরকারের এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অত্যন্ত মহৎ। কিন্তু সমন্বিত পরিকল্পনা, ধারাবাহিকতা ও নজরদারির অভাবে এসব উন্নয়ন প্রচেষ্টার সুফল মানুষের কাছে ঠিকমতো পৌঁছায় না।
পত্রিকার প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৭ সালে। তিন বছর পর ২০২০ সালে অনেকটা তড়িঘড়ি করে চালু করা হয় ৫০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম। এখন পর্যন্ত হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় লোকবল দেওয়া হয়নি। ফলে কোনো রকমে আউটডোর সেবা দেওয়া হলেও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে জনবল সংকটের কারণে সালথা উপজেলার আটটি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কার্যক্রমও প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।
সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে মোট পদ রয়েছে ৮৬টি। এর মধ্যে ৩৪টি পদই শূন্য। আর প্রথম শ্রেণির মোট ৯টি পদের মধ্যে একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদ ছাড়া অন্য আটটি পদই শূন্য। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্টের চারটি পদ, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের একটি, সহকারী সার্জনের দু’টি ও ডেন্টাল সার্জনের একটি পদ প্রথম থেকেই শূন্য আছে। একই সঙ্গে হাসপাতালে যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণাধীন আটটি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২২টি পদের মধ্যে ১৬টিই শূন্য রয়েছে। সাতটিতে মেডিক্যাল অফিসারই নেই। ফলে মানুষ এসব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কার্যত কোনো চিকিৎসাই পাচ্ছে না।
শুধু সালথা নয়, সারা দেশের প্রায় সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্রই একই রকম। চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য জরুরি জনবলের অভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অথচ প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার প্রধান ভরসা এখনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম নির্বিঘœ করতে হবে। আমরা আশা করি, সালথা সহ উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।