খুলনা | শুক্রবার | ০৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

মন্ত্রণালয়ের অডিট আপত্তি

শরণখোলার তাফালবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক আছে, কাম্য শিক্ষার্থী নেই

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি |
১১:২২ পি.এম | ০২ অক্টোবর ২০২৩


বাগেরহাটের শরণখোলার তাফালবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক আছে কিন্তু কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই। গত ২৫ আগস্ট কলেজের হাজিরা খাতায় অর্থনীতি বিষয়ে মাত্র তিনজন শিক্ষার্থী পেয়ে আপত্তি দেন মন্ত্রণালয়ের অডিট কমিটি। এছাড়া ওই শিক্ষক স্কুল ফাঁকি দিয়ে একাধিক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে সময় ব্যয় করার অভিযোগে উপজেলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় রেজুলেশন করা হয়। রেজুলেশনে শিক্ষার মান উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে উলে­খ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। 
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে কাগজে কলমে শিক্ষার্থী দেখিয়ে অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে আব্দুল মালেক রেজাকে নিয়োগ দেয় ম্যানেজিং কমিটি। তবে বাস্তবে নিয়োগের পর থেকে অদ্যবদি অর্থনীতি বিষয়ে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক অডিট কমিটির হাতে। অপরদিকে, আব্দুল মালেক রেজা তার বিষয়ে শিক্ষার্থী না থাকার সুযোগে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেরিয়ে পড়েন সাংবাদিকতায়। তিনি নিজেকে একাধিক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস চষে বেড়ান। অথচ তিনি কলেজ থেকে মাস শেষে নিয়মিত বেতন তুলে নিচ্ছেন। এঘটনায় গত ২৬ জানুয়ারি উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রশাকের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেজুলেশন করা হয়। 
এব্যাপারে সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন আকন শান্ত বলেন, শিক্ষকরা স্কুলে না যেয়ে সাংবাদিকতায় সময় কাটাবে এটা কাম্য নয়। এতে এলাকার শিক্ষার মান উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই বিষয়টি সমন্বয় কমিটির রেজুলেশনে এনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তাফালবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মানিক চাঁদ রায় বলেন, অর্থনীতির বিষয়ে সব জায়গায় শিক্ষার্থী একটু কম আছে। তবে তিনজন পরীক্ষা দিলেও রেজিষ্ট্রেশনে একটু বেশি থাকে। মন্ত্রণালয়ের অডিট কমিটি প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র নিয়ে গেছে। তারা রিপোর্ট দিলে আপত্তির বিষয় জানা যাবে। জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক ড. এনামুল ইসলাম বলেন, আমারা অডিটে তিন বছরের কাগজপত্র দেখেছি। তাতে তাফালবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের অর্থনীতি বিষয়ে কমপক্ষে ২৫ জনের স্থানে মাত্র দুই থেকে তিনজনের বেশী কোন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অডিট আপত্তি দেয়া হবে। অপরদিকে, তাফালবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সময় অন্য একজনকে নিয়োগ দেয়ার পরে তা বাতিল করে রেজুলেশনে ফ্লুইড ব্যবহার করে আব্দুল মালেককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জানিয়েছেন। 
এব্যাপারে তাফালবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজে অর্থনীতির শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, অডিটরেরা কেবল মাত্র অডিট করে গেছেন। তবে শিক্ষার্থী কম থাকার বিষয়টি তারা এখনো আমাদের কিছু জানায়নি। তাদের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।